Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Madhyamik 2020

অ্যাডমিট কার্ড পৌঁছে দিলেন ‘পুলিশকাকু’রা

দুর্গাপুর নিউ টাউনশিপ থানার স্বপ্না মার্কেটের কাছে বাড়ি মিলি বার্নোয়ালের। এমএএমসি টাউনশিপের বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্রী সে।

জিপ ছুটিয়ে ছাত্রীর অ্যাডমিট কার্ড আনলেন এই পুলিশকর্মী। পরে, এক ছাত্রকে পরীক্ষার শুভেচ্ছাও জানান। বারাবনিতে। (ডান দিকে) অ্যাডমিট আনতে সিভিক ভলান্টিয়ারের মোটরবাইকে সওয়ার ছাত্রী। দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র

জিপ ছুটিয়ে ছাত্রীর অ্যাডমিট কার্ড আনলেন এই পুলিশকর্মী। পরে, এক ছাত্রকে পরীক্ষার শুভেচ্ছাও জানান। বারাবনিতে। (ডান দিকে) অ্যাডমিট আনতে সিভিক ভলান্টিয়ারের মোটরবাইকে সওয়ার ছাত্রী। দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:১২
Share: Save:

জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। পথেঘাটে পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার প্রথম দিনের পরীক্ষায় ‘পাশ’ করলেন পুলিশকর্মীরাও, মত পরীক্ষার্থী, অভিভাবক, স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে প্রশাসনিক কর্তাদের। পুলিশ সহায়তা বুথের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের নানা ভাবে সাহায্য করা হয়। হেল্পলাইনে সাহায্যপ্রার্থী পরীক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধান করা হয় দ্রুত।

দুর্গাপুর নিউ টাউনশিপ থানার স্বপ্না মার্কেটের কাছে বাড়ি মিলি বার্নোয়ালের। এমএএমসি টাউনশিপের বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্রী সে। পরীক্ষাকেন্দ্র হয়েছে এবিভি হাইস্কুলে। কেন্দ্রে ঢোকার সময়ে তার খেয়াল হয়, অ্যাডমিট কার্ডটিই সঙ্গে আনা হয়নি। চিন্তায় পড়ে যায় মিলি। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন সিভিক ভলান্টিয়ার নরোত্তম ঘোষ। তিনি মিলিকে মোটরবাইকে করে দ্রুত বাড়ি নিয়ে আসেন। অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে মিলি যখন পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকে ততক্ষণে অবশ্য বাকিরা ঢুকে গিয়েছে। তবে ঢোকার আগে সে নরোত্তমবাবুকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেনি। ছাত্রীটির মা কাঞ্চন বার্নোয়াল বলেন, ‘‘খুবই চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ সাহায্য করায় পরীক্ষায় বসতে মেয়ের কোনও সমস্যা হয়নি।’’

একই ছবি দেখা গিয়েছে বারাবনিতেও। পুরনো অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে বারাবনির গৌরাণ্ডি উচ্চ বিদ্যালয়ে পৌঁছে গিয়েছিল বারাবনিরই বালিয়াপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী আলপনা বাউড়ি। সিসি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আলপনা ঠিক সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত হয়। কিন্তু নিজের আসন খুঁজে পাচ্ছিল না। গৌরাণ্ডি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুষার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বোর্ডের তরফে পাঠানো নথি ঘেঁটে দেখি, ওই পরীক্ষার্থীর বিষয়ে পাঠানো তথ্য ঠিক আছে। কিন্তু অ্যাডমিট কার্ড দেখে বুঝতে পারি, সেটি গত বছরের।’’ এর পরে তিনি বিষয়টি বালিয়াপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পল্লবনারায়ণ রায়কে বলেন। পল্লববাবু বলেন, ‘‘স্কুলের কাগজপত্র ঘেঁটে দেখি, ওই ছাত্রী স্কুল থেকে অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে যায়নি। কিন্তু আমাদের স্কুল থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার। সেই সময়ে এগিয়ে আসেন বারাবনির পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির মোবাইল ডিউটিতে থাকা বারাবনি থানার এএসআই ইমদাদুল হক। তিনি জিপ ছুটিয়ে অ্যাডমিট কার্ড পৌঁছে দেন।’’ আলপনার প্রতিক্রিয়া, ‘‘পুলিশকাকুর কথা কখনই ভুলব না।’’

পুলিশকর্মীদের এই ভূমিকার প্রশংসা করেছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক অজয় পাল, জেলা মাধ্যমিক পরিচালন কমিটির আহ্বায়ক দিব্যেন্দু সাহা। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত জানান, কোথাও যাতে যানজট না হয় তা দেখার পাশাপাশি, পরীক্ষার্থীদের বাস পেতে সমস্যা হলে বা কেউ দেরি করে এলে তাকে পৌঁছে দেওয়া ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিল পুলিশ সহায়তা বুথগুলিতে। হেল্পলাইনে নানা সমস্যার কথা জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik 2020 Asansol Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE