এই ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় স্মরণজিৎকে। নিজস্ব চিত্র
এক কিশোর খুনের ঘটনায় তার বাবাকে আটক করল পুলিশ। পশ্চিম বর্ধমানের হিরাপুর থানা এলাকায় সোমবার রাতের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ পরিবারের লোকেরা স্মরণজিৎ সিংহ (১২) নামে ওই নাবালককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘নিহতের মাথায় গুলির চিহ্ন আছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। তারা বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, বার্নপুরের রাধানগর রোড লাগোয়া পঞ্জাবিপাড়ায় ছেলেকে নিয়ে একাই থাকতেন ভুপিন্দর সিংহ। বছর দশেক আগে তাঁর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে মারা যান। ভুপিন্দরবাবু জমি ও বাড়ি ভাড়ার দালালির কাজ করেন বলে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে ভুপিন্দরবাবু তাদের জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর ছেলে শিঙাড়া খেতে চেয়েছিল। তিনি ছেলেকে ঘরে একা রেখে দোকানে শিঙাড়া কিনতে যান। সোয়া ৮টা নাগাদ ফিরে দরজা খুলে সামনের ঘরে ছেলেকে দেখতে পাননি। পাশের ঘরে গিয়ে তিনি দেখেন, সেখানে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে স্মরণজিৎ। তিনি চিৎকার করে আত্মীয়-পরিজনেদের ডাকেন। তাঁরাই স্মরণজিৎকে মেঝে থেকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ।
এই ঘটনার পিছনে পুরনো কোনও শত্রুতা না কি অন্য কোনও কারণ রয়েছে?
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এলাকাটি খুবই শান্তিপ্রিয়। আগে কখনও এমন ঘটেনি। এ দিন সন্ধ্যাতেও ওই বাড়ির আশপাশে এলাকার বহু মানুষজনকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু বহিরাগতদের আনাগোনা দেখা যায়নি। গুলির শব্দও শোনা যায়নি বলে পুলিশকে তাঁরা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, ভুপিন্দরবাবুর বাড়ি ঘেঁষে রয়েছে তাঁর ভাই ও অন্য নিকট আত্মীয়দের বাড়ি। তাঁদের বাড়ির চৌহদ্দিতে উঁচু পাঁচিল রয়েছে। সামনে বড় লোহার গেট আছে। পুলিশের অনুমান, ভর সন্ধ্যায় পাঁচিল ঘেরা লোহার গেট ডিঙিয়ে ভিতরে ঢুকে এই অপকর্ম করা সম্ভব নয়। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে ভুপিন্দরবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘরের পিছন দিকের জানলা থেকে তাঁর ছেলেকে গুলি করা হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু ঘরের পিছন দিকের জানলায় খুব ঘন লোহার জাল লাগানো রয়েছে। সেখান থেকে গুলি করা প্রায় অসম্ভব বলে মনে করছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy