Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
কলেজ পরিচালন সমিতির পদ থেকে ইস্তফা

বাংলায় বলার আর্জি না মানায় ক্ষুব্ধ মেয়র

কলেজ সূত্রে জানা যায়, গোড়া থেকেই সঞ্চালিকা অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন হিন্দিতে।

মেয়র দিলীপ অগস্তি। নিজস্ব চিত্র

মেয়র দিলীপ অগস্তি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৪২
Share: Save:

অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকা কথা বলছিলেন হিন্দিতে। বক্তব্য রাখতে উঠে বাংলায় কথা বলার আর্জি জানিয়েছিলেন শহরের মেয়র তথা কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি। সঞ্চালিকা উল্টে এই আপত্তির কারণ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বুধবার দুর্গাপুরের মাইকেল মধুসূদন মেমোরিয়াল কলেজে নতুন ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান ছেড়ে গেলেন মেয়র দিলীপ অগস্তি। এই ঘটনায় অপমানিত বোধ করেছেন জানিয়ে পরে পরিচালন সমিতি থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

এ দিন ওই কলেজের অনুষ্ঠানে মঞ্চে মেয়র ছাড়া ছিলেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী, কলেজের অধ্যক্ষ জিএম হেলালউদ্দিন। কলেজ সূত্রে জানা যায়, গোড়া থেকেই সঞ্চালিকা অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন হিন্দিতে। মেয়র তাঁর বক্তব্যে জানান, কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী থেকে উপস্থিত সকলেই বাংলাভাষী। হিন্দি ভাষাকে সম্মান জানিয়েও তিনি চান, অনুষ্ঠান বাংলায় পরিচালনা করা হোক। অতিথিদের তিনি বলেন, ‘‘বাংলায় থেকে বাংলায় কথা বলব না, এটা ঠিক নয়। কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হিসেবে এই ত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’’

মেয়র অভিযোগ করেন, তাঁর বক্তব্য শেষ হওয়ার পরে সঞ্চালিকা উল্টে তাঁর আর্জিকে কার্যত ‘চ্যালেঞ্জ’ জানিয়ে হিন্দি ভাষা ব্যবহারে আপত্তির কারণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এর পরে অনুষ্ঠানের মাঝপথেই বেরিয়ে যান মেয়র। কলেজের অধ্যক্ষ ও ছাত্রছাত্রীরা তাঁকে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করলেও তিনি রাজি হননি। পুরসভায় গিয়ে কলেজের পরিচালন সমিতি থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা লিখিত ভাবে উচ্চশিক্ষা দফতরে জানিয়ে দিয়েছেন বলে মেয়র জানান। তিনি বলেন, ‘‘কলেজের অধ্যক্ষ বসে রয়েছেন। অথচ, অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকা পরিচালন সমিতির সভাপতিকে অসম্মান করেছেন। যেখানে মানীর মান নেই, সেখানে আমি নেই। প্রত্যেকের মান-সম্মান রয়েছে।’’

উপাচার্য সাধনবাবু বলেন, ‘‘আমার সামনেই ঘটনাটি ঘটেছে। আমি যেটুকু বুঝেছি, সৎ উদ্দেশ্য নিয়েই মেয়র একটি আর্জি জানিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য যাতে সমালোচনা না হয়, সেই অনুরোধও করেছিলেন। সভাপতির পদ থেকে তাঁর ইস্তফার কথা শুনেছি। প্রয়োজনে তাঁর সঙ্গে কথা বলব।’’

কলেজের পড়ুয়াদের একাংশের অবশ্য দাবি, সেপ্টেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহ ‘রাজভাষা পক্ষ’ হিসাবে পালিত হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনার ভার দেওয়া হয়েছিল কলেজের হিন্দি বিভাগকে। সে জন্যই হয়তো এ দিন হিন্দিতে অনুষ্ঠান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন সঞ্চালিকা। কলেজের অধ্যক্ষ জানান, অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য গঠিত কমিটির তরফে জানানো হয়েছিল, হিন্দি ও বাংলা মিশিয়ে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করা হবে। কিন্তু তা হয়নি। পুরোটাই হিন্দিতে হয়। তিনি বলেন, ‘‘কোথাও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। মেয়রের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE