এই অস্ত্র দিয়েই খুন করা হয় বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
মাথায় লোহার পাইপ দিয়ে মেরে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরের ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার কালীপুর গ্রামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বাধা দিতে গেলে বাবা-মাকেও সে মারধর করে বলে অভিযোগ। বুধবার রাতে ঘটনার পরে গৌতম বাগদি নামে ওই ব্যক্তি নিজেই পুলিশের কাছে ধরা দেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। ধৃতকে জেরা করে খুনের কারণ জানার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌতম ঝাঁঝড়া কোলিয়ারির এমআইসি-র ঠিকাশ্রমিক। পারিবারিক অশান্তির জেরে তাঁর সঙ্গে স্ত্রী কল্পনা বাগদির (৩০) বচসা বাধে ওই রাতে। অভিযোগ, বচসার মাঝে হঠাৎ লোহার পাইপ দিয়ে স্ত্রীর মাথার পিছন দিকে আঘাত করে গৌতম। বাধা দিতে গেলে সে বাবা নেপালবাবু ও মা ছবিদেবীকেও মারধর করে বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থায় তিন জনকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা কল্পনাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তের বাবা-মা কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনা সম্পর্কে বিশদ তথ্য মিলবে বলে ধারণা তদন্তকারীদের।
কল্পনার জা সরস্বতী জানান, তাঁরা পাশের বাড়িতে থাকেন। ওই রাতে কল্পনা তাঁকে রান্না করে দিতে বলেন। তিনি যখন রান্না করছিলেন সেই সময় দু’বার কোনও কিছু দিয়ে আঘাতের আওয়াজ শুনতে পান। প্রথমে ভেবেছিলেন, বাড়িতে রাখা কাঠের টুকরো কোনও ভাবে মাটিতে পড়ে শব্দ হয়েছে। পরে কল্পনাদের বাড়িতে যান তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দেখি, বাড়ির বাইরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে কল্পনা। তাড়াতাড়ি কোলে তুলে নিয়ে চোখে-মুখে জল দিই। ততক্ষণে আশপাশের লোকজনও জড়ো হয়ে গিয়েছে। তাঁরাই জানান, ভিতরে আমার শ্বশুর-শাশুড়িও জখম অবস্থায় পড়ে আছেন।’’ তিন জনকেই গ্রামের একটি অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুলিশ এলে গৌতম নিজেই ধরা দেন। কী কারণে এই ঘটনা ঘটল? সরস্বতী বলেন, ‘‘কী ভাবে এমন হল এখনও বুঝতে পারছি না। বাড়িতে কখনও ঝগড়া-অশান্তির খবর শুনিনি। হঠাৎ কী হল যে এই রকম ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গেল, কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।’’ শাশুড়ির জ্ঞান ফিরলে সব জানা যাবে, মনে করছেন তিনিও।
পুলিশ জানায়, ধৃতকে জেরা করে কী হয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে, এমন সন্দেহ থেকেই গৌতম এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। আজ, শুক্রবার তাকে দুর্গাপুর আদালতে তোলা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy