কাঁকসার বাসুদেবপুরে। নিজস্ব চিত্র
গত বছরের মতো এ বারেও শহিদ স্মরণে দেখা গেল না নেতাদের। গতবার শহিদ বেদিতে রংয়ের প্রলেপও পড়েনি। এ বার রঙয়ের পোঁচ অবশ্য পড়েছে। কাঁকসার বাসুদেবপুরে চার দলীয় কর্মীর স্মরণে এ বছরও নেতৃত্বের প্রতি উদাসীনতার অভিযোগ করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ।
বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত দলীয় স্তরে দিনটি পালনের জন্য কোনওরকম নড়চড় দেখা যায়নি বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা দুপুর গড়ানোর পরে নিজেরাই চারটি শহিদ বেদি রং করেন। জানানো হয় শ্রদ্ধা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নয়ের দশকের শেষ দিকে বাসুদেবপুর এলাকায় সিপিএমের মধ্যে ‘অন্তর্দ্বন্দ্ব’ শুরু হয়। ১৯৯৮-এর পঞ্চায়েত ভোটের আগে এক পক্ষ তৃণমূলে যোগ দেয়। ১১ ডিসেম্বর বোমার আঘাতে নিহত হন পাশের বিনোদপুরের এক সিপিএম নেতা। ১২ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় বাসুদেবপুরের এক তৃণমূল নেতার। পরের তিন বছরে মৃত্যু হয় আরও তিন জন তৃণমূল ও এক জন সিপিএম কর্মীর। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বাসুদেবপুরে এসে দলকে নিহত কর্মীদের স্মরণ করার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন। এর পরে প্রতি বছর তৃণমূল ১২ ডিসেম্বর দলের নিহত নেতা-কর্মীদের স্মরণ করে।
কিন্তু বছর বছর এই স্মরণ ঘিরে নেতৃত্বের ‘উদাসীনতার’ ছবিই প্রকট হচ্ছে বলে গুঞ্জন এলাকার তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে। তাঁরা জানান, রাজ্যে পালাবদলের পরে, প্রথম কয়েক বছর নেতাদের স্মরণ-কর্মসূচিতে আসতে দেখা যেত। কিন্তু গত দু’-তিন বছর সে ছবি উধাও। ২০১৮-য় স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরাই বেদিতে মালা দিয়ে দিনটি স্মরণ করেন। তবে সে বার বেদিতে রং করা হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল কর্মী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘দলের পুরনো কর্মীরাই ঠিকমতো জায়গা পান না। সেখানে শহিদদের আর কে মনে রাখে!’’ স্থানীয় তৃণমূল কর্মী নরেশচন্দ্র ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘কে এলেন বা এলেন না, সেটা বড় নয়। গ্রামের দলীয় কর্মীরাই একজোট হয়ে শহিদ দিবস পালন করেছি।’’
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি অবশ্য বলেন, ‘‘যাঁরা শহিদ স্মরণ করেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই দলের দীর্ঘদিনের কর্মী। নেতারা যাননি বলেই কর্মসূচির গুরুত্ব খর্ব হয়েছে, এমনটা নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy