প্রতীকী ছবি।
মিষ্টির মেয়াদ কত দিন, তা লিখে রাখতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অব ইন্ডিয়া। এমন নির্দেশে তাঁদের সমস্যা বাড়বে বলে দাবি বর্ধমানের মিষ্টি ব্যবসায়ীদের বড় অংশের। কী ভাবে এই নির্দেশ কার্যকর করা হবে, তা নিয়েও চিন্তায় পড়েছেন বলে জানান তাঁরা।
১ অক্টোবর থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকর হওয়ার কথা। নির্দেশে বলা হয়েছে, প্যাকেটজাত নয় এমন মিষ্টির ক্ষেত্রে ট্রে-তে লিখে রাখতে হবে, সেটির কত দিনের মধ্যে খাওয়া উপযুক্ত। প্যাকেটজাত মিষ্টির ক্ষেত্রে লিখতে হবে সেটির মেয়াদ (এক্সপায়ারি ডেট)। উপাদানের উপর নির্ভর করে তা উল্লেখ করতে হবে বিক্রেতাকে।
বর্ধমানের সীতাভোগ, মিহিদানা, শক্তিগড়ের ল্যাংচা, কালনার মাখাসন্দেশের খ্যাতি রয়েছে। ছানার ভাল জোগান আছে গোটা পূর্ব বর্ধমানেই। তাই এখানে বেশিরভাগ মিষ্টি ছানা ও দুধের উপকরণ দিয়ে তৈরি হয়। বর্ধমানের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের অন্যতম কর্তা সৌমেন দাসের দাবি, ‘‘আমাদের বেশিরভাগ সনাতন মিষ্টি, দুধ-ছানায় তৈরি। অন্য নানা রাজ্যে বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার হয়। বাংলার মিষ্টি এক-দু’দিনের বেশি রাখা যায় না। কিন্তু বর্ষা বা অন্য আবহাওয়ায় কখনও কখনও সমস্যা বাড়ে। তার উপরে এই নিয়মে বিড়ম্বনা বাড়ছে।’’
মিষ্টি বিক্রেতা প্রমোদ সিংহের দাবি, উত্তর ভারতের কিছু রাজ্যে বেসন, খোয়া, ক্ষীর, সুজির মতো নানা উপাদান ব্যবহার করা হয় মিষ্টিতে। তাই সেগুলি কিছু বেশি দিন রাখা সম্ভব। রসগোল্লা, সন্দেশ, রসমালাইয়ের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। তাই তারা এক দিনের মধ্যে ব্যবহার করার উপযুক্ত, এমন ‘ট্যাগ’ তৈরি করতে দিয়েছেন। আপাতত এ ভাবেই কাজ চালাবেন বলে জানান তিনি। শহরের আর এক মিষ্টি ব্যবসায়ী প্রদীপ ভকত জানান, সে দিনই খাওয়ার উপযুক্ত, এমন ‘ট্যাগ’ বানাতে দিয়েছেন। দুধের মিষ্টি বা পায়েস জাতীয় মিষ্টির ক্ষেত্রে এই সময়সীমা পাঁচ ঘণ্টা দেওয়া হবে। তাঁর মতে, এই নিয়মের ফলে ক্রেতাদেরও বিভ্রান্তি বাড়বে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাদের মিষ্টি বাইরে রফতানি হত। এখন এই নিয়মে আমরা সে ঝুঁকি নেব না।’’ শক্তিগড়ের ল্যাংচা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাবুল মণ্ডল জানান, তাঁরা এ বিষয়ে এখনও কিছু সিদ্ধান্ত নেননি।
বর্ধমানের বাসিন্দা শ্যামল রায় বলেন, ‘‘কী ভাবে ছানার মিষ্টিতে মেয়াদের কথা লেখা সম্ভব, তা আমার মতো ক্রেতারাও বুঝতে পারছি না।’’ আর এক ক্রেতা গোপাল রায় জানান, ছানার মিষ্টি রেফ্রিজ়ারেটরে কয়েকদিন রেখেও খাওয়া যায়। নতুন নিয়মের বিষয়টি নিয়ে কৌতুহল রয়েছে, জানান তিনি।
জেলার ফুড সেফটির দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক তথা ডেপুটি সিএমওএইচ (২) সুনেত্রা মজুমদার বলেন, ‘‘এ বিষয়ে রাজ্যের তরফে কোনও নির্দেশিকা আসেনি। বুধবার একটি বৈঠক রয়েছে। সেখানে আলোচনা হতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy