Advertisement
১১ মে ২০২৪

অল্প বৃষ্টিতেই ডুবে যায় পাড়া, ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে জল জমত না এলাকায়। সমস্যা শুরু প্রায় দেড় দশক আগে থেকে। শেষ ৫-৭ বছর তা আরও জটিল হয়েছে। ৩২ বছর ধরে এলাকায় বাস করছেন সমিতা সামন্ত। তাঁর দাবি, গত ১৪ বছর ধরে বর্ষায় এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ছে।

শনিবার বিকেলে আধ ঘণ্টার বৃষ্টিতেই জল জমে যায় শ্রীনগরপল্লির রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র

শনিবার বিকেলে আধ ঘণ্টার বৃষ্টিতেই জল জমে যায় শ্রীনগরপল্লির রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

বৃষ্টির জন্য হাপিত্যেশ করে রয়েছেন মানুষ। অথচ, নিম্নচাপের এক পশলা বৃষ্টিতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন দুর্গাপুরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীনগরপল্লির বাসিন্দাদের একাংশ। শনিবার বিকেলে মাত্র আধ ঘণ্টার বৃষ্টিতে জল জমে যায় এলাকায়। রাস্তাঘাট ডুবে যায়। কয়েকটি নিচু বাড়িতে জল ঢুকে যায়। ভরা বর্ষায় কী পরিস্থিতি হবে, সে নিয়েই আতঙ্কিত বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে জল জমত না এলাকায়। সমস্যা শুরু প্রায় দেড় দশক আগে থেকে। শেষ ৫-৭ বছর তা আরও জটিল হয়েছে। ৩২ বছর ধরে এলাকায় বাস করছেন সমিতা সামন্ত। তাঁর দাবি, গত ১৪ বছর ধরে বর্ষায় এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, ‘‘দুর্গাপুজো পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি চলে। পাড়ার ছেলেরা পুজোর চাঁদা নিয়ে যায় জলে দাঁড়িয়ে, এমনও ঘটে। বৃষ্টি হলে জল না নামা পর্যন্ত আমরা বাড়ির বাইরে বেরোতে পারি না।’’ ২০০০ সাল থেকে বাস করছেন প্রদীপ সাহা। তিনি জানান, ২০১০ সাল থেকে জল জমছে তাঁদের পাড়ায়। তিনি বলেন, ‘‘শ্রীনগরপল্লির নীচের দিকে বড় নর্দমা তৈরি হওয়ার পর থেকেই সমস্যার শুরু। বৃষ্টি হলে ঘরের মধ্যে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকি। ঘরে জল ঢোকে। রান্নাবান্না হয় না। বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে যাওয়া যায় না। কয়েক ঘণ্টা লাগে জল নামতে।’’

বাসিন্দাদের দাবি, জোরে কিছুক্ষণ বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়। আকাশে ঘন মেঘ দেখলে তাঁরা আতঙ্কে থাকেন। সঙ্গীতা দাস নামে এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘বর্ষায় আমরা যে কী পরিস্থিতিতে থাকি সে শুধু আমরাই জানি। এখানেই এত খারাপ দশা, পাশের পাড়ায় তা নেই। কিন্তু সমস্যা মেটানোর কোনও উদ্যোগ দেখি না। বছরের পর বছর কাউন্সিলর আসেন। প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কিছু হয় না।’’ তাঁরা জানান, নর্দমা উপচে রাস্তায় জল জমে যায়। সেই নোংরা জল-কাদার উপর দিয়েই যাতায়াত করতে হয়।

কেন এমন পরিস্থিতি? স্থানীয় কাউন্সিলর তথা ২ নম্বর বরো চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ হালদার জানান, ১৯৯৭ সাল নাগাদ ডিএসপি টাউনশিপের জল এই এলাকা দিয়ে নেমে যাওয়ার ব্যাপারে তৎকালীন পুরবোর্ড সম্মতি দেয়। তখন থেকেই সমস্যা শুরু হয়। বিস্তীর্ণ এলাকার জল এই সব ওয়ার্ড ঘুরে নামতে থাকায় জলের গতি কমে যায়। জাতীয় সড়ক পেরিয়ে জল নেমে যায় ভিড়িঙ্গি চাষিপাড়ার দিকে। রমাপ্রসাদবাবুর দাবি, জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলায় সড়কের নীচ দিয়ে জল নেমে যাওয়ার সব ‘আউটলেট’ ব্যবস্থা নড়বড়ে হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করা হয়েছে। কিন্তু ফল হয়নি। তাঁর আশ্বাস, ‘‘নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে ২৮ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে অর্থমন্ত্রীর কাছে। তা অনুমোদন হয়ে এলে আগামী বছর কাজ শুরু করতে পারব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rain Water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE