Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
ধুলোয় ঢেকেছে রাস্তা, মুখ ঢাকছেন পথচারী 

আট মাসেও কাজ শেষ হয়নি, ক্ষোভ গোলাপবাগের রাস্তা নিয়ে

গোলাপবাগ মোড় থেকে কৃষ্ণসায়র পার্কের মোড় পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার, আলো লাগানো ও সৌন্দর্যায়নের কাজে হাত দিয়েছে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা। কিন্তু রাস্তা সংস্কারের গতি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

এমনই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত, গোলাপবাগে। নিজস্ব চিত্র

এমনই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত, গোলাপবাগে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:২০
Share: Save:

একে অন্ধকার রাস্তা, তার উপর ধুলোর ঝড়। ফলে রুমাল বা ওড়নায় মুখ ঢাকা ছাড়া রাস্তা পারাপারের উপায় নেই গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তায়। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া থেকে নিত্যযাত্রীদের ক্ষোভ, এমনিতেই হাঁটা যায় না। তার উপর আট মাস ধরে সংস্কারের কাজ চলছে। এখন গাড়ি গেলে শ্বাস নিতেও কষ্ট হয় ধুলোয়।

গোলাপবাগ মোড় থেকে কৃষ্ণসায়র পার্কের মোড় পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার, আলো লাগানো ও সৌন্দর্যায়নের কাজে হাত দিয়েছে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা। কিন্তু রাস্তা সংস্কারের গতি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের দাবি, ওই রাস্তা সন্ধের পর অন্ধকারে ডুবে থাকে। তাতেও কোনও রকমে চলাফেরা করা যেত। কিন্তু এখন রাস্তার এবড়ো-খেবড়ো হয়ে যাওয়ায় ও ক্রমাগত ধুলো ওড়ায় হাঁটাচলা করা যায় না। ওই রাস্তা তৈরির ঠিকাদারকে নিয়ে পড়ুয়াদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে নানা রসিকতা, মন্তব্যও ছড়িয়ে পড়েছে। ইংরেজি বিভাগের উদিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, গবেষক হরজিৎ কৌরদের কথায়, ‘‘রাস্তার কাজ শেষ আর হচ্ছে না। খুঁড়ে রেখে দেওয়া হয়েছে। ধুলোয় প্রাণ যাচ্ছে আমাদের।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষেরও ক্ষোভ, রাস্তার ধুলো থেকে ক্যাম্পাসের খালটি দূষিত হচ্ছে।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যাওয়ার জন্য এই রাস্তাটি ব্যবহার করেন বীরভূম, আউশগ্রাম-সহ বেশ কিছু এলাকার বাসিন্দারাও। বীরভূমের রামপুরহাটের এক অ্যাম্বুল্যান্স চালক আসগর আলির দাবি, ‘‘আমি নিয়মিত ওই রাস্তা দিয়ে বর্ধমান হাসপাতালে রোগী নিয়ে যেতাম। এখন ওই রাস্তা দিয়ে গেলে ধুলোর জেরে সুস্থ মানুষও রোগী হয়ে যাবেন।’’ আর এক গাড়িচালক শান্তনু দাস বলেন, ‘‘আগে গাড়ির আলো ভরসা ছিল। এখন রাস্তা খারাপের জন্য গাড়ি চালানোই বিপদ।’’

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা-আধিকারিক তথা পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণারত সন্তু ঘোষ বলেন, ‘‘ওই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করলে শ্বাসকষ্টজনিত নানা রোগ দেখা যেতে পারে। আমার পরামর্শ, যাঁরা ওই রাস্তায় প্রাতঃভ্রমণ করেন, তাঁরা অন্য রাস্তা খুঁজে নিন।’’ তাঁর দাবি, ওই রাস্তার ধূলিকণা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে তাতে ক্ষতিকারক উপাদান রয়েছে। সে কারণে বাতাস দূষিত হচ্ছে। তবে এলাকায় প্রচুর গাছ থাকায় রাস্তার বাইরে লোকালয়ে দূষণ এখনও তেমন ভাবে ঢোকেনি। ভুক্তভোগীদের দাবি, ধুলোর হাত থেকে বাঁচাতে রাস্তা সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করুক বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা। পাশপাশি বাতাসে বিষাক্ত ধূলিকণা কমানোর জন্য রাস্তায় দিনে অন্তত তিন বার জল দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

রাস্তা তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে কোনও রকম ভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি। তবে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাস্তা সংস্কারের কাজে দেরি হচ্ছে, এটা ঠিকই। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্যে ইঞ্জিনিয়রদের নির্দেশ দিয়েছিলাম। তাঁরা জানিয়েছেন, ফুটপাত তৈরির জন্য বিশেষ ধরনের টালি পেতে সময় লাগছে। ফুটপাত তৈরি করার পরে রাস্তার কাজে হাত দেওয়া হবে।’’ তবে রাস্তায় নিয়মিত জল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে তাঁর আশ্বাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dust Construction Burdwan University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE