দু’বছর আগে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়, সাবেক বর্ধমান জেলার প্রায় আট লাখ চাষিকে দেওয়া হবে মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট (সয়েল হেলথ কার্ড)। ইতিমধ্যে আগামী দু’বছরের জন্যও মাটির নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়ে গেলেও পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও বেশি চাষিকে ওই কার্ড কৃষি দফতর দিতে পারেনি বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, একটি রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল, সাবেক বর্ধমান জেলা জুড়ে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও চাষের জেরে মোট ৩১টি ব্লকের ২৫টিতেই জমিতে অম্লত্ব রয়েছে। এর জেরে মাটির উর্বরতা কমছে বলে জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। জৈব কার্বনের পরিমাণ কমতে থাকায় উপকারী জীবাণুও কমছে বলে অনুমান করা হয়। ওই রিপোর্ট সামনে আসার পরে ২০১৫-১৬ সালে জেলা জুড়ে মাটির ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫৬০টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠায় কৃষি দফতর। ঠিক হয়, এর ভিত্তিতে প্রায় আট লাখ ‘সয়েল হেলথ কার্ড’ তৈরি করে তা চাষিদের মধ্যে বিলি করা হবে। কিন্তু এ যাবৎ মেরেকেটে তিন লাখ চাষি সয়েল হেলথ কার্ড হাতে পেয়েছেন বলে খবর। তবে পূর্ব বর্ধমানের উপ-কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “বিভিন্ন ব্লকের সহকারী কৃষি উন্নয়ন আধিকারিকদের (এডিএ) হাতে ওই কার্ড দেওয়া হয়েছে। তাঁরা পঞ্চায়েতের মাধ্যমে কার্ডগুলি বিলি করছেন।”
এই কার্ডে কৃষকের নাম, জমির পরিমাণ, খতিয়ান, দাগ নম্বর, জমির অম্লত্ব, ক্ষারত্ব, লবণ, জৈব-কার্বণ, ফসফেট ও পটাশের পরিমাণ থাকছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে খবর। সঙ্গে থাকছে জমির উর্বরতা বাড়ানোর দাওয়াই।
এরই মধ্যে পূর্ব বর্ধমানের ২৩টি ব্লকে গড়ে দু’জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং কৃষক-বন্ধুদের সঙ্গে মাটির নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে কৃষি দফতর। তবে সে কাজেও বিপত্তি। কৃষি-কর্তারা জানান, অত্যাধিক গরম আর বিকেলের দিকে নিয়মিত বৃষ্টির জেরে মাটির নমুনা সংগ্রহ করতে সমস্যা হচ্ছে। জগন্নাথবাবু জানান, চলতি বছরে জেলায় ৭৫ হাজার নমুনা সংগ্রহের কথা থাকলেও আড়াই মাসে সাড়ে ১৫ হাজারের মতো নমুনা সংগ্রহ করা গিয়েছে। মাটিতে থাকা সালফার, জিঙ্ক, নাইট্রোজেন-সহ পাঁচটি রাসায়নিকের পরিমাণও এ বার পরীক্ষা করা হবে। এর কারণ, বিশেষজ্ঞদের দাবি, এর ফলে জমিতে রাসায়নিকের পরিমাণ কতটা রয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। দাওয়াই দেওয়া হবে, চাষ-জমির উর্বরতা ফেরানোরও। তবে চাষিদের আক্ষেপ, এই কার্ড থাকলে জমি তৈরি, জমির যত্ন নিতে সুবিধা হয়। কিন্তু গতবারের নমুনার ভিত্তিতে হওয়া কার্ডই হাতে পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy