ফাইল চিত্র
মাঝে আর সপ্তাহখানেক। তার পরেই মেয়াদ ফুরোচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলার চার পুরসভার। তার পরে সেগুলিতে বর্ধমান বা গুসকরা পুরসভার মতো প্রশাসক বসিয়ে বোর্ড পরিচালনা করা হবে, না কি কলকাতার মতো বিদায়ী মেয়রকে মাথায় রেখে প্রশাসকমণ্ডলী গড়া হবে, তা নিয়ে এখনও কোনও নির্দেশিকা আসেনি বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে এরই মধ্যে গোটা বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর।
পূর্ব বর্ধমানের ছ’টি পুরসভার মধ্যে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বর্ধমান ও গুসকরায় মেয়াদ ফুরনোয় প্রশাসক বসানো হয়েছে। বর্ধমান পুরসভার দায়িত্বে রয়েছেন মহকুমাশাসক ও গুসকরার দায়িত্বে এক ডেপুটি ম্যজিস্ট্রেট। এর মধ্যে ২১ মে-র মধ্যে কাটোয়া, কালনা, মেমারি ও দাঁইহাট পুরসভার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। সেগুলির পুরবোর্ডের ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে এখনও কোনও নির্দেশ মেলেনি বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখনও কোনও সিদ্ধান্ত বা নির্দেশ আসেনি। আশা করছি, আগামী সপ্তাহে সরকারি নির্দেশ আসবে।’’
মেয়াদ ফুরোতে চলা চার পুরসভার বোর্ডই রয়েছে তৃণমূলের দখলে। ২০১৫ কালে পুরভোটে কাটোয়ায় কংগ্রেস ও তৃণমূল ১০টি করে আসন পেয়েছিল। তৃণমূল বোর্ড গঠন করে, পুরপ্রধান হন অমর রাম। পরে কংগ্রেসের কাউন্সিলরেরা তৃণমূলে যোগ দেন। তার পরে অমর রামকে সরিয়ে পুরপ্রধান করা হয় রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, ‘‘এখনও নির্দেশ আসেনি। তাই বিষয়টি নিয়ে কিছু জানা নেই।’’
পাঁচ বছর আগে দাঁইহাট পুরসভায় বোর্ড গড়েছিল সিপিএম। কিন্তু বছর দু’য়েক আগে সিপিএম থেকে কয়েকজন কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে, বোর্ডের দখল নেয় তৃণমূল। কালনা ও মেমারিতে ভোটে জিতে বোর্ড গড়েছিল তৃণমূল। কালনার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ, মেমারির পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ীদের বক্তব্য, ‘‘সরকারের সিদ্ধান্তে কোনও অসুবিধা হবে না।’’
পুর-প্রশাসনের সঙ্গে দীর্ঘ সময় যুক্ত থাকা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অভিজিৎ কোনার অবশ্য দাবি করেন, ‘‘প্রশাসক বসলেও ঘুরপথে ক্ষমতা তৃণমূলের নেতাদের হাতেই থাকবে। ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্যই রাজ্য সরকার নির্দেশ দেবে। তবে পুর-আইনে আমলাকেই প্রশাসক হিসেবে বসানোর কথা বলা হয়েছে।’’ বিজেপির জেলা সাংগঠনিক সভাপতি (কাটোয়া) কৃষ্ণ ঘোষের দাবি, ‘‘রাজনৈতিক নেতার হাতে নয়, ক্ষমতা থাকা উচিত প্রশাসকের হাতে।’’
তবে পুর-আইন বিশেষজ্ঞ, পেশায় আইনজীবী শোভন কুমার বলেন, ‘‘আইনে নির্দিষ্ট ভাবে তেমন কিছু বলা নেই। প্রশাসক হিসেবে রাজ্য সরকার যে কাউকে বসাতে পারে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘প্রশাসক হিসাবে কোনও আমলা বসবেন না অন্য কেউ, সেটা রাজ্য সরকারের বিষয়। যে-ই বসুন না কেন, নাগরিক পরিষেবা বা করোনা-মোকাবিলার কাজে ঘাটতি রাখা যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy