এখানেই হচ্ছে ইএসআই হাসপাতাল সম্প্রসারণের কাজ। নিজস্ব চিত্র
ফের বিতর্কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যেই তিনি রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক ও আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিরুদ্ধে ‘সিন্ডিকেটে মদত’ দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। বাবুলের এই মন্তব্যের বিরোধিতায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ এবং আইনি পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে তৃণমূল।
আসানসোলের ইএসআই হাসপাতাল সম্প্রসারণের কাজ চলছে। সেই কাজই রাজ্যের মন্ত্রী ও মেয়রের মদতে হওয়া সিন্ডিকেটের জেরে বাধা পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বাবুল। বৃহস্পতিবার রেলের একটি প্রতীক্ষালয় উদ্বোধন করতে এসে বাবুল বলেন, ‘‘দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আমার কাছে কান্নাকাটি করছেন। কারণ বেশ কিছু যুবক সিন্ডিকেট বানিয়ে তাঁদের কাছে থেকে নির্মাণ সামগ্রী কেনার জন্য ওই ঠিকাদারকে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছেন। ফলে সম্প্রসারণের কাজে গতি আসছে না। মলয় ঘটক ও জিতেন্দ্র তিওয়ারির মদতেই চলছে সিন্ডিকেট।’’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেয় তৃণমূলও। দলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘উনি কোনও উন্নয়ন করেননি। সিন্ডিকেটের কথা বলে নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে চাইছেন। ওঁর ওই মন্তব্যের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’’ মেয়রের বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্তব্য অত্যন্ত অসাংবিধানিক। নিন্দার ভাষা নেই।’’ মেয়রের বিরুদ্ধে এই মন্তব্যের জন্য বাবুলের বিরুদ্ধে পুরসভার তরফে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন পুরসভার আইনি পরামর্শদাতা রবিউল ইসলাম। তবে মলয়বাবুকে ফোন করা হলে তাঁর পরিচিত এক জন ফোন ধরে বলেন, ‘‘স্যার ডাক্তারের চেম্বারে আছেন।’’
তবে সরাসরি সিন্ডিকেটের কারণে কাজে বাধার অভিযোগ করেননি সংশ্লিষ্ট কোনও পক্ষই। সম্প্রসারণের দায়িত্ব পেয়েছেন দিল্লির বাসিন্দা পঙ্কজ সেন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথম দিকে সামান্য বাধা ছিল। অনেক জায়গাতেই এমনটা হয়। তবে এখন আর কোনও সমস্যা নেই।’’ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার অতনু ভদ্রও জানান, তাঁর কাছেও সিন্ডিকেটের জেরে কাজ থমকে গিয়েছে, এমন খবর নেই। হাসপাতাল চত্বরে গিয়ে দেখা গিয়েছে, জনা কয়েক শ্রমিক মাটি কাটার কাজ করছেন। কয়েক জন ইটের গাঁথনিও তুলছেন।
এই মন্তব্য নিয়ে চাপানউতোরের আগে ‘বেফাঁস’ মন্তব্যের অভিযোগে সাংসদের বিরুদ্ধে হিরাপুর থানায় এক ব্যক্তি অভিযোগ জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবারই কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রকল্পের শিবিরে প্রতিবন্ধীদের সহায়ক সামগ্রী দেওয়া হচ্ছিল। সেখানে যোগ দিয়ে এক ব্যক্তিকে লক্ষ করে বাবুল বলেন, ‘‘আপনার এক পা ভেঙে ক্রাচ দিয়ে দিতে পারি।’’ এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই সাংসদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন স্নেহাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় নামে হিরাপুরের এক ব্যক্তি। অভিযোগ প্রসঙ্গে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলে জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাবুলের বক্তব্য, ‘‘যে কেউ অভিযোগ করতেই পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy