বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিককে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ উঠল এক টিএমসিপি নেতার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার পরেই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স ফ্যাকাল্টির সচিব শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি পোস্ট করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ওরফে রামিজ নামে ওই ছাত্রনেতার আচরণ নিয়ে উপাচার্য নিমাই সাহাকে এসএমএসও করেন। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সুজন চক্রবর্তীও এ দিন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, ‘‘উপাচার্যের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছি। যে দলেরই কাজ হোক না কেন, এটা একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়।’’ উপাচার্যের দাবি, তিনি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না।
এ দিন বেলা পৌনে দুটো নাগাদ শুভপ্রসাদবাবুর ফেসবুক পেজে লেখা দেখা যায়, ‘এইমাত্র আবার আমার ওপর একটি আক্রমণের চেষ্টা হল। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তথাকথিত ছাত্রনেতার নেতৃত্বে এক দঙ্গল মানুষ আমার দফতরে এসে নিকৃষ্টতম ভাষায় আক্রমণ করে প্রায় শারীরিক আক্রমণ করতে উদ্যত হয়েছিল। সহকর্মীরা উপস্থিত থাকায় বিষয়টা অতদূর নিয়ে যাওয়ার সাহস হয় নি। কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। যথারীতি উত্তর নেই’। যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘ওই ছাত্রনেতা এক মহিলাকে নিয়ে এসে হুজ্জুতি বাধান। তাঁকে ভর্তি করানোর জন্য চাপ দেন। অথচ উপাচার্য ভর্তি-সংক্রান্ত রিপোর্ট চেয়েছেন। সে জন্য তাঁকে সোমবার আসতে বলি। কিন্তু এখনই ভর্তি করে নিতে হবে বলে আমার হাত ধরে টানাটানি করে। গালিগালাজ করে।’’
ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারী, অন্য আধিকারিকেরাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (বুটা) অন্যতম সম্পাদক অংশুমান কর বলেন, “শিক্ষক, আধিকারিক, কর্মচারী, ছাত্র সকলের সুসম্পর্কই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির চাবিকাঠি। কোনও সমস্যা হলে তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া ভাল। শুভপ্রসাদের সঙ্গে যা হয়েছে তা অনভিপ্রেত। নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক সংগঠনের নেতা দেবমাল্য ঘোষ বলেন, “শুভপ্রসাদ উপাচার্যকে বিষয়টি জানিয়েছে। আমরাও সংগঠনগত ভাবে প্রতিবাদ জানাব।’’ কর্মচারী সংগঠনের নেতা বুদ্ধদেব চক্রবর্তীও বলেন, “এ রকম ঘটনা প্রায় ঘটছে। কর্তৃপক্ষ চুপ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।’’
বিরোধী দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “শিক্ষামন্ত্রীকে ফোন করে বলেছি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কী জঙ্গলের রাজত্বে পরিণত হচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। ওই ছাত্রনেতা অলিখিত ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বস’ হতে চাইছে। এ সব ঘটনায় কর্তৃপক্ষ মৌন থাকার মানেই সম্মতি দেওয়া। এর প্রতিবাদ করতেই হবে।’’
যদিও আমিনুল ইসলামের দাবি, “কোনও ঘটনাই ঘটেনি। উনি কেন সোশ্যাল মিডিয়ায় এ সব লিখলেন বুঝতে পারছি না। এক ছাত্রী ফেলোশিপে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। উনি ভর্তি নিতে অস্বীকার করলে উপাচার্যকে বিষয়টি জানানো হয়।’’ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, আমাদের সংগঠনের কেউ শিক্ষক-আধিকারিকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে পারেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy