এই জায়গাতেই জলের সংযোগ ছিন্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র।
এলাকা থেকে বেশি ভোট পেয়েছে বিজেপি। সে কারণে জল সরবরাহের পাইপলাইন ছিন্ন করার অভিযোগ উঠল জামুড়িয়ার বাহাদুরপুর পঞ্চায়েতের ভূতবাংলো এলাকায়। সোমবার এ নিয়ে সরব হন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তিনি টুইট করে জানান, বিজেপির বিজয়োৎসবে তাঁরা যোগ দেওয়ায় এলাকার জলের সংযোগ ছিন্ন করা হয়েছে অভিযোগ করে তাঁকে চিঠি দিয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।
তৃণমূল পরিচালিত জামুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের। এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।” জামুড়িয়ায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ভারপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত রায়ের বক্তব্য, ‘‘বেআইনি ভাবে জলের সংযোগ নিয়ে ইটভাটা চলছিল। তাই তা কেটে দেওয়া হয়েছে।”
এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া ভূতবাংলোর পাশ দিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলের পাইপলাইন গেলেও দু’টি পাড়া সেখান থেকে জল পেত না। বহু বার জল সরবরাহের আবেদন জানিয়েও ফল হয়নি। তাই কিছু বাসিন্দা বছরখানেক আগে ভূতবাংলো থেকে দু’কিলোমিটারের মধ্যে দু’টি সেতুর পাশে ওই পাইপলাইনে ছিদ্র করে সেখান থেকে সংযোগ তৈরি করে দু’টি এলাকায় জল সরবরাহের ব্যবস্থা করেন।
এ বার ভূতবাংলো এলাকার বুথে বিজেপি ২২২, তৃণমূল ১১৭ এবং সিপিএম ৩৪টি ভোট পেয়েছে। এলাকার অনেকের অভিযোগ, শনিবার বিকেলে তৃণমূলের কিছু কর্মী জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কর্মীদের নিয়ে এসে পাইপলাইন থেকে কলের মুখ খুলে দেয়। তাতে তীব্র জলসঙ্কট তৈরি হয়েছে এলাকায়। দু’টি কুয়ো থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। চাপাকলে পর্যাপ্ত জল মেলে না। জল না পেয়ে বিপাকে পড়েছে প্রায় দু’শো পরিবার।
বিজেপির জামুড়িয়া ২ ব্লক সভাপতি গৌতম মণ্ডল দাবি করেন, দু’টি সেতুর কাছে পাইপলাইনে ছিদ্র করে দীর্ঘদিন ধরে জল নিচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। তা জানা থাকা সত্ত্বেও এত দিন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর কোনও পদক্ষেপ করেনি। অথচ, এলাকার লোকজন তাঁদের বিজয় মিছিলে যোগ দেওয়ার পরেই সেখানকার জলের সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ গৌতমবাবুর। তাঁর বক্তব্য, “বিজেপি জেতায় তৃণমূলের সরকার কর্মীদের এ সব করতে বাধ্য করছে। ওই দু’টি পাড়ায় জলের স্থায়ী ব্যবস্থা করার দাবিতে আমরা আন্দোলনে নামব।’’
স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য নাথুনি দুষাদের বক্তব্য, “জলের সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়ায় আমিও বাড়িতে জল পাচ্ছি না। এলাকার বাসিন্দারা প্রধান পাইপলাইন থেকে জল আনার ব্যবস্থা করেছিলেন। এখন সেই সংযোগ কেটে দেওয়ায় অনেকে মনে করছেন, বিজেপি জেতায় তৃণমূলের লোকজন এই কাজ করেছে। আমরা চাই, সংশ্লিষ্ট দফতর এই কাজ করেছে, সেটা মানুষ যেন বুঝতে পারে।’’
ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগের কথা মানতে চাননি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকেরা। সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘সেতু দু’টির পাশে পাইপের ছিদ্র ভরাট করে দেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy