এক বার ভোটের আগে বাস চালানোর উদ্যোগ হয়েছিল। দিন কয়েক চলেওছিল। কিন্তু ভোট মেটার পরেই বাস বন্ধ। বাস মালিকদের দাবি, রাস্তা সরু হওয়ার জন্য ওই এলাকায় বাস চালানো অসুবিধে। দুর্গাপুর পুরসভায় সিনেমা হল রোড ও স্টেশন বাজার এলাকায় যাতায়াতের জন্য তাই ভরসা সেই অটো। মওকা বুঝে অটো ইচ্ছে মতো ভাড়া চায় বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। ফলে, পুর এলাকায় থেকেও যাতায়াতের সমস্যায় ভুগছেন ওই বাসিন্দারা। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, দখলদারদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে রাস্তা সম্প্রসারণের উদ্যোগ হবে।
দুর্গাপুরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত সিনেমা হল রোড ও স্টেশন বাজার এলাকার প্রায় হাজার দশেক মানুষের বাস। শহরের অন্যতম প্রাচীন বাজার এই স্টেশন বাজার এলাকা। তার এক দিকে রয়েছে দুর্গাপুর স্টেশন। কিন্তু এই রকম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কোনও বাস পরিষেবা নেই। বাসিন্দারা জানান, চলাফেরার জন্য তাঁদের মূল ভরসা সিএনজি চালিত কয়েকটি অটো। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে এই রাস্তা দিয়ে ৮বি রুটের বাস চলাচল শুরু হয়েছিল। কিন্তু ভোট মিটে যাওয়ার পরেই তা বন্ধ হয়ে যায়।
ওই এলাকার বাসিন্দা তথা বিজেপির দুর্গাপুর ৩ ব্লক সভাপতি কল্যাণ দুবে অভিযোগ করেন, সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ী সকলেই চান, এই রাস্তা দিয়ে বাস চলুক। আগে যে মিনিবাসগুলি এই রাস্তা দিয়ে যেত সেগুলি এখন পিসিবিএল মোড় থেকে এসবি মোড় হয়ে দুর্গাপুর স্টেশনে যায়। দুর্গাপুর বাজারের দিকে রেলের একটি টিকিট কাউন্টার আছে। বিধাননগর, মুচিপাড়া, সগড়ভাঙা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের সুবিধার্থে সেটি তৈরি করা হয়েছে। অথচ, বাস না থাকায় সেই সুবিধা নিতে পারেন না তাঁরা। ওই সব এলাকা থেকে অনেক মানুষজন স্টেশনে আসেন। দুর্গাপুর বাজার হয়ে বাস চললে সহজে স্টেশনে পৌঁছনো যেত। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, বহু দিন ধরে এখানে বাস পরিষেবার দাবি জানালেও ফল হয়নি।
কল্যাণবাবুর আরও অভিযোগ, রাস্তার অনেক অংশ জবরদখল হয়ে থাকায় তা সরু হয়ে গিয়েছে। দখলদার উচ্ছেদে পুরসভা কোনও পদক্ষেপ করেনি। সরু রাস্তার অজুহাতে বাস মালিকেরা বাস চালাতে চান না। তাঁর দাবি, বাস না চলায় এই এলাকায় অটোর দৌরাত্ম্য বেড়েছে। ট্রেন থেকে নেমে অনেকেই অটো ধরতে এ দিকে আসেন। অটোগুলিতে যথেষ্ট ভিড় হয়। নিয়ম বহির্ভূত ভাবে যাত্রী নিয়ে যায় সেগুলি। অনেক সময়ে অটোচালকেরা ইচ্ছো মতো ভাড়া নেন।
বাসিন্দারা জানান, ৮বি রুটের বাসগুলি সিনেমা হল রোড হয়ে দুর্গাপুর বাজার হয়ে সগড়ভাঙা দিয়ে মুচিপাড়া যাতায়াত শুরু করেছিল। সিনেমা হল রোডের বাসিন্দা কেশব সিংহের কথায়, “আমাদের মুচিপাড়া বা দুর্গাপুর হাসপাতাল যাওয়ার জন্য বাস ধরতে হলে হেঁটে স্টেশন বা এসবিএসটিসি গ্যারাজ মোড়ে যেতে হয়, যা এখান থেকে বেশ খানিকটা দূরে।” তাঁদের দাবি, এই রাস্তায় মিনিবাস চালানো হোক।
দুর্গাপুরের মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তাটি সংকীর্ণ। ফলে দিনের অধিকাংশ সময়েই যানজট লেগে থাকে। সংগঠনের সম্পাদক কাজল দে বলেন, “ওই রাস্তায় বাস চালানো খুবই অসুবিধার। দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়।” রাস্তা সম্প্রসারণ করা হলে বাস চালানোর ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করা হবে বলে সংগঠনের তরফে জানানো হয়। বিজেপি নেতা কল্যাণবাবু বলেন, “আমরা চাই রাস্তায় যাঁরা ব্যবসা করছেন, তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে রাস্তা চওড়া করুক পুরসভা।”
দুর্গাপুরের ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দখলদারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে রাস্তা সম্প্রসারণের চিন্তাভাবনা রয়েছে পুরসভার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy