চলছে টোটো। ফাইল চিত্র।
রাস্তার নামার পর থেকেই বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়েছে ব্যাটারি চালিত গাড়ি টোটো। কখনও উঠেছে বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন। কখনও আবার অটো, রিকশাচালকদের সঙ্গে গোলমালে জড়িয়েছেন টোটোচালকেরা। এ বার বাস কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়লেন তাঁরা।
এই বচসার জেরে সোমবার সারা দিন বন্ধ থাকল বালিখাল-ধর্মতলা রুটের সব বাস। এতেই শেষ নয়। জি টি রোডে টোটো বন্ধ করা না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ওই রুটে বাস পরিষেবা বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চালকেরা। এ দিন বালিখাল-ধর্মতলা রুটের ৪২টি বাস বন্ধ থাকায় চরম সমস্যায় পড়েন অফিসযাত্রীরা। কারণ, বালি থেকে ধর্মতলা যাওয়ার ওই একটিই রুট। এ দিন বিকেলে পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র বিষয়টি জানতে পেরে বলেন, “এটা ঠিক হয়নি। অবাঞ্ছিত ঘটনা। অবিলম্বে বাস চালুর বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে বালিখাল বাসস্ট্যান্ডে কালী পুজোর আয়োজন করেছিলেন বালিখাল-ধর্মতলা রুটের ৫৪ নম্বর বাসের কর্মীরা। সেখানে টোটোচালকেরাও অংশ নেন। রাতেই সেতুর নীচে বাস দাঁড় করানো নিয়ে কয়েক জন বাস কর্মীর সঙ্গে কয়েক জন টোটোচালকের বচসা বাধে। তা হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। তখনকার মতো সমস্যা মিটে গেলেও রবিবার ফের গোলমাল বাধে দুই পক্ষে। অভিযোগ, রাজা মুরাদ খান নামে এক কন্ডাক্টরকে মেরে মুখ ফাটিয়ে দেন এক টোটোচালক।
৫৪ নম্বর রুটের বাস কর্মী সংগঠন সূত্রের খবর, ওই ঘটনার পরেই টোটো চালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন বাস কর্মীরা। রাজা মুরাদকে বেলুড় স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর পরেই সোমবার সকাল থেকে বাস চালানো বন্ধ করে দেন কর্মীরা। ৫৪ নম্বর রুটের এক বাস কর্মী আশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ওঁরা অহেতুক আমাদের উপরে হামলা চালিয়েছে। জি টি রোডে টোটো চললে খুব সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাই ওই রাস্তায় টোটো বন্ধ না হলে বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখব।” তবে টোটো সংগঠনের পক্ষেও বাস চালকদের বিরুদ্ধে এক টোটোচালককে বাড়িতে ঢুকে মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এক টোটোচালক গ্রেফতার হয়েছেন। এ দিন অবশ্য তিনি জামিন পান।
কিছু দিন আগেও অটোচালকদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েচিলেন টোটোচালকেরা। তার জেরে জি টি রোডে অবরোধ-বিক্ষোভ হয়। পরিস্থিতি সামলাতে নামে র্যাফ। ঘটনার পরে হাওড়া সিটি পুলিশ জি টি রোড, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে-সহ কয়েকটি রাস্তায় টোটো চলাচলে রাশ টানার পরিকল্পনা নেয়। আবার বালি থেকে রিষড়ার মধ্যে জি টি রোডে টোটো চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তার পরেও বহাল তবিয়তে চলছে টোটো-রাজ। হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “টোটোর লাইসেন্স বা নম্বর কিছুই নেই। এমনকী বিমাও নেই। তাই তাদের নিয়ে সমস্যা তো রয়েছেই। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় স্তরে পুরসভার সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। টোটো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রেগুলেটিং কমিটি তৈরি করা দরকার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy