প্রতীকী ছবি।
ছিল ২৭। হল ২১।
গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যা কমল হুগলিতেও। প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলার চারটি মহকুমার মধ্যে গ্রামীণ পুলিশ এবং কমিশনারেট এলাকার মোট ২৭টি জায়গাকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গণ্ডিবদ্ধ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এ দিন ছ’টি এলাকা কমানো হয়েছে। ফলে, সব মিলিয়ে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা ২১-এ দাঁড়িয়েছে। এ দিনও অবশ্য মাস্কবিহীন অবস্থায় লোকজনকে রাস্তায় দেখা গিয়েছে।
এক শ্রেণির মানুষের ‘কুছ পরোয়া নেহি’ মনোভাব তো রয়েছেই, পুলিশের দৌঁড়ঝাপ, প্রশাসনের নজরদারি কমে যাওয়া এবং আনলক-পর্বে জনগণ বাঁধনছাড়া হয়ে ওঠার জন্যই সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে বলে মনে করছেন অনেকে। তা ছাড়া, ত্রাণ থেকে আন্দোলন— সবেতেই রাজনৈতিক দলের নেতাদের সদলবলে রাস্তায় নেমে পড়াকেও দুষছেন অনেকে।
গত কয়েক দিন ধরে হুগলিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ‘কন্টেনমেন্ট জ়োনে’ (গণ্ডিবদ্ধ এলাকা) বিধিনিষেধ কঠোর ভাবে মানা দরকার বলে অনেকেই মনে করছেন। পুলিশ-প্রশাসনের দাবি, গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় কড়াকড়ি করা হবে। চিহ্নিত এলাকায় মানুষকে গৃহবন্দি রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বুধবার বিকেল থেকে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে মাইক প্রচার শুরু হয়েছে। গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় কেউ যাতে বাড়ির বাইরে বের না হন, সেই ব্যাপারে সর্তক করা হচ্ছে।
জেলার (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার তথাগত বসু বলেন, ‘‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পেতে যাতে অসুবিধা না হয়, সেই জন্য স্থানীয় বিডিও এবং পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ সেগুলি বাড়িতে পৌঁছে দেবে।’’ একই কথা জানিয়ে চন্দননগরের সিপি হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘আমরা মাইকে প্রচার করছি। স্থানীয় পুরসভা বা পঞ্চায়েতের সঙ্গে সমন্বয় রেখে পুলিশ কাজ করবে।’’
আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধিতে অনেকে প্রশাসনকেও ‘দোষী’ ঠাওরাচ্ছেন। তাঁদের অভিযোগ, অফিস-কাছারি খুললেও পর্যাপ্ত গণ-পরিবহণের ব্যবস্থা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে মানুষ কাজ হারানোর ভয়ে গাদাগাদি করে বাসে চাপতে বাধ্য হয়েছেন। নাগরিক সংগঠন ‘অল বেঙ্গল সিটিজেন্স ফোরাম’-এর রাজ্য সভাপতি শৈলেন পর্বত বলেন, ‘‘আমরা জেলাশাসককে লিখিত ভাবে জানিয়েছি, বাসে ঠাসাঠাসি করে করে মানুষ যাতায়াত করলে সংক্রমণ বাড়তেই থাকবে। মুখ্যসচিবের কাছেও ভিড় বাসের ছবি-সহ ই-মেল পাঠানো হয়। কিন্তু কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। ফলে যা হওয়ার ছিল, তাই হয়েছে। প্রশাসনের গা-ছাড়া মনোভাবের জন্যই করোনাকে কব্জা করা গেল না।’’
করোনা পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলির ধারাবাহিক রাস্তায় ভিড় করে কর্মসূচি কতটা যুক্তিসঙ্গত, সেই প্রশ্নও উঠছে। তবে, পিএম নেতা সুদর্শন রায়চৌধুরীর দাবি, ‘‘আমাদের কর্মসূচি দূরত্ব বিধি পুরোপুরি মেনেই হচ্ছে। গ্রামে যে জনবিক্ষোভ হচ্ছে, তার জন্য তৃণমূল দায়ী।’’ বিজেপি নেতা স্বপন পালের বক্তব্য, ‘‘গরিবের স্বার্থেই পথে নামতে বাধ্য হচ্ছি আমরা। কারণ, তাঁদের টাকা তৃণমূল মেরে দিয়েছে। আমরা সকলকেই দূরত্ববিধি মেনে চলতে বলছি।’’ পক্ষান্তরে, জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবেরও দাবি, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি দূরত্ব বিধি মানতে। কর্মীরাও সচেতন। করোনা পরিস্থিতিতে বিজেপি-সিপিএম আন্দোলনের নামে যে ভাবে সমস্যা তৈরি করছে, আমরা বাধ্য হয়ে পথে নামছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy