প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত অমিত দাস। — নিজস্ব চিত্র
তখন সে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় রাস্তা থেকে একটি দুর্গা ঠাকুরের পাঁচালি কুড়িয়ে পায়। তখন থেকেই বাড়িতে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি তৈরি করতে শুরু করে বাশঁবেড়িয়ার ধোপাঘাটের বাসিন্দা অমিত দাস।
বর্তমানে সে একাদশ শ্রেণির ছাত্র। পড়াশোনার ফাঁকে অন্য ছেলেমেয়েরা যখন খেলাধুলোয় মত্ত তখন অমিত নিয়োজিত করে রাখত মূর্তি তৈরিতে। সেই ধারা এখনও বজায় রেখেছে অমিত। শুধু তাই নয়, মূর্তি তৈরি করে যে টাকা রোজগার হয়, তা দিয়ে সে নিজের পড়াশোনার খরচ চালায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে যে, বাবা প্রতাপ দাসের ছোটখাট মুদির দোকান রয়েছে। মাটির দেওয়াল ও টালির ছাউনি দেওয়া বাড়ি থাকলেও জমিজমা নেই। তা দিয়ে কষ্টেসৃষ্টে সংসার চলে অমিতদের। প্রতাপবাবু বললেন, ‘‘আমার দুই ছেলে। বড় ছেলে একাদশ শ্রেণির পরে আর পড়াশোনা করেনি। ভাড়াগাড়ি চালায় সে। আর ছোটছেলে অমিত ঠাকুর বানিয়ে যে টাকা পায় তা দিয়ে তার পড়াশোনা চালায়। আমরা ওকে বাধা দিই না।’’ মূর্তি তৈরির জন্য গঙ্গা থেকে নিজেই মাটি তোলে। টিফিসের খরচ জমিয়ে ঠাকুরের রং কেনে অমিত। পড়ে থাকা ঠাকুরের কাঠমো তুলে এনে কুমোরকে বিক্রি করে যে পয়সা পায়, তা দিয়েই ঠাকুর তৈরির সরঞ্জাম কেনে সে। দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, জগদ্ধাত্রী, কার্তিক ঠাকুর বানায় অমিত। এ বছর সে ৫টি কার্তিক ঠাকুর বানিয়েছে। তার মধ্যে চারটি বিক্রি করবে ও একটি নিজেই পুজো করবে। পড়াশোনার ক্ষেত্রে অমিত পাশে পেয়েছে বন্ধুদের। বন্ধুরা পড়ায় তাকে নানা সহযোগিতা করে। অমিতের কথায়, ‘‘ঠাকুর তৈরি করতে আমার ভাল লাগে। তাই নিজে ঠাকুর বানিয়ে নিজেই পুজো করি। বাকি ঠাকুর বিক্রি করি। এতে আমার পড়াশোনার খরচ উঠে যায়। যে টাকা বাঁচে, তা মায়ের কাছে রেখে দিই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy