Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

আইনজীবীকে মারের নালিশ

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুনীলবাবু অভিযোগ করেছেন একটি উত্তরাধিকার শংসাপত্র পাওয়ার জন্য গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কাউন্সিলরের কাছে যাচ্ছিলেন।

সুনসান: বৃহস্পতিবার আদালত চত্বর। নিজস্ব চিত্র

সুনসান: বৃহস্পতিবার আদালত চত্বর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৩৪
Share: Save:

এক আইনজীবীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপির কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে ভদ্রেশ্বরের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, প্রীতি সাউ নামে ওই আইনজীবী এবং তাঁর প্রতিবেশী স্থানীয় ঘটকবাগানের বাসিন্দা সুনীল চৌধুরীর মাথা ফেটেছে। ঘটনায় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সবিতা বেহেরা, তাঁর স্বামী ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঘটনার প্রতিবাদে চন্দননগর আদালতে কর্মবিরতি পালন করেন আইনজীবীরা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুনীলবাবু অভিযোগ করেছেন একটি উত্তরাধিকার শংসাপত্র পাওয়ার জন্য গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কাউন্সিলরের কাছে যাচ্ছিলেন। প্রতিবারই কোনও না কোনও অজুহাতে তাঁকে ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন সবিতা বেহেরা। ওই রাতে প্রীতিদেবীকে নিয়ে ফের কাউন্সিলরের বাড়ি যান তিনি। অভিযোগ, এ বারও বাড়িতে স্বামী নেই বলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন মহিলা কাউন্সিলর। প্রীতিদেবী ও সুনীলবাবুর সঙ্গে এ নিয়ে বচসা বেধে যায় তাঁর। খবর পেয়ে ফিরে আসেন কাউন্সিলরের স্বামী উমেশ বেহরা।

সুনীলবাবুর অভিযোগ, কাউন্সিলরের স্বামী এসে জানিয়ে দেন কয়েক হাজার টাকা না দিলে ওই শংসাপত্র দেওয়া হবে না। প্রতিবাদ করেন প্রীতিদেবী। অভিযোগ তারপরই তাঁদের উপর চড়াও হন উমেশ ও তাঁর এক শ্যালক সন্তোষ বেহেরা। অভিযোগ, সন্তোষই ইট দিয়ে সুনীলবাবুর মাথায় আঘাত করেন। তাঁকে বাঁচাতে গেলে প্রীতিদেবীর মাথায়ও লাঠি বসিয়ে দেওয়া হয়। দু’জনকে রক্তাক্ত দেখে পালিয়ে যান উমেশ ও সন্তোষ।

চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয় জখমদের। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সুনীলবাবুর মাথায় ছ’টি ও প্রীতিদেবীর দু’টি সেলাই পড়েছে। ওই রাতেই হাসপাতালে আসেন আইনজীবীরা। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

সবিতাদেবীর দাবি, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে আমাকে হেনস্থা করা হয়েছে। আমি অপেক্ষা করতে বলেছিলাম মাত্র। সব ষড়যন্ত্র।’’ টাকা চাওয়ার কথা স্বীকার করেননি তিনি। স্থানীয় সূত্রে খবর বিজেপির কাউন্সিলর হলেও সম্প্রতি সবিতাদেবী তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছেন।

ভদ্রেশ্বরের উপ-পুরপ্রধান প্রকাশ গোস্বামী বলেন, ‘‘ওই শংসাপত্র পেতে কোনও খরচ লাগে না। তবে এ ক্ষেত্রে কী ঘটেছে জানি না। খতিয়ে দেখছি।’’ সেই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, ‘‘বিজেপির ভিতর একটা কোন্দল চলছে। এটা তার জেরও হতে পারে।’’ বিজেপি জেলা সভাপতি সুবীর নাগ বলেন, ‘‘বিজেপির টিকিটে জিতলেও উনি তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছেন। আমাদের যোগ কমছে। আর এ ধরনের চক্রান্ত আমরা করি না। টাকা চেয়েছিলেন কিনা সেটা তদন্ত করে দেখা হোক।’’

জখম আইনজীবী প্রীতিদেবী বলেছেন, ‘‘এক প্রতিবেশী বিপদে পড়ে ডেকেছিলেন, তাই গিয়েছিলাম। এর মধ্যে ষড়যন্ত্র আসে কোত্থেকে! মারধর তো করা হয়েছে আমাদেরই। সব আইন অনুযায়ী হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Court Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE