প্রতীকী ছবি
কেন্দ্র হাওড়াকে ‘হটস্পট’ ঘোষণা করেছে কয়েকদিন আগেই। তারপরে পুলিশ কড়াকড়ি শুরু করলেও এখনও অনেক জায়গায় দূরত্ব-বিধি ঠিকমতো মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। একই সমস্যা দেখা দিয়েছে হাওড়ার ধূলাগড়ির আনাজ বাজারেও। তাই সংক্রমণের আশঙ্কায় এবং তা ঠেকাতে আজ, শুক্রবার থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ওই বাজার। সেখানে কর্মরত শ্রমিক এবং পাইকারি বিক্রেতারা যৌথ ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
ওই বাজারের শ্রমিক সংগঠনের নেতা মহম্মদ সিদ্দিক বলেন, ‘‘করোনা সচেতনতায় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা— এই সব নিয়ে আমরা প্রথম থেকেই সচেতন ছিলাম। কিন্তু ধূলাগড়ি বাজারে ভিড় অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছে গত কয়েক দিনে। ফলে, নিয়ম মানা কার্যত সম্ভব নয়। শ্রমিকেরাও সংক্রমণের ভয়ে কাজ করতে চাইছেন না। সেই কারণে সবাই মিলে বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ জেলাশাসক মুক্তা আর্য বলেন, ‘‘জেলা পরিষদকে বিষয়টি দেখতে বলেছি।’’
হাওড়া জেলার ‘কোলে মার্কেট’ বলা হয় ধূলাগড়ির এই বাজারকে। শুধু হাওড়াই নয়, হুগলি এবং দুই ২৪ পরগনা থেকে চাষিরা এখানে পাইকারি দরে আনাজ বিক্রি করতে আসেন। নাসিক থেকে পেঁয়াজ আসে। আবার লাগোয়া কলকাতা-সহ পড়শি জেলার খুচরো আনাজ বিক্রেতারা এখান থেকে আনাজ কিনে নিয়ে গিয়ে নিজেদের এলাকায় বিক্রি করেন। বাজারে প্রায় ৫০০ শ্রমিক কাজ করেন। নিয়মিত আসেন কয়েকশো ক্রেতা-বিক্রেতা। কিন্তু করোনার জন্য খুচরো আনাজ বিক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে। রাজমিস্ত্রি, টোটো-চালক, অটোচালকরান বাঁচার তাগিদে পাড়ায় পাড়ায় আনাজ বিক্রি করছেন। তাঁরা ধূলাগড়িতেই যাচ্ছেন আনাজ কিনতে।
এতদিন পর্যন্ত বাজারে পুলিশ প্রশাসন এবং শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শারীরিক দূরত্ব বাজায় রাখা, মাস্ক পরা ইত্যাদির উপরে নজরদারি চলছিল। কিন্তু ভিড় ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল। ‘হটস্পট’ ঘোষণা হওয়ার পরে হাওড়া সিটি পুলিশ কড়াকড়ি শুরু করায় বাজার কমিটি এবং শ্রমিক সংগঠনগুলি বসে ঠিক করে, ভিড় যা বাড়ছে তাতে সব নিয়ম মেনে বাজার চালানো সম্ভব নয়। তা ছাড়া, ট্রাক থেকে আনাজ নামানো বা তোলার সময়ে দু’জন শ্রমিক লাগে। মাস্ক পরে তাঁদের পক্ষে সেই কাজ সম্ভব নয়। তাতে দম আটকে যেতে পারে। আবার আনাজের বস্তা নামানোর সময়ে দু’জন শ্রমিককে খুব কাছাকাছি থাকতে হয়। তাতে শারীরিক দূরত্বও মানা যায় না। তাঁরা কাজ করতে বেঁকে বসেন।
কয়েকদিন আগে ধূলাগড়িতে করোনা সংক্রমণের খবর মেলে। তার ফলেও শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এইসব পরিস্থিতি বিবেচনা করেই সবাই মিলে ঠিক করেন, বাজার আর বসবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy