Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ভোট মিটতেই সক্রিয় দুষ্কৃতীরা

সব মিলিয়ে হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়ায় সমাজবিরোধী দৌরাত্ম্যের বিরাম নেই। ফলে, পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শহরের সাধারণ মানুষ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৯ ০২:৪২
Share: Save:

দু’সপ্তাহ আগেই ব্যান্ডেলের নেতাজি পার্ক এবং মানসপুর বস্তিতে বোমা-গুলি চলেছিল। তার আগের দিন ইমামবাড়ার কাছে জোরে মোটরবাইক চালানোর প্রতিবাদ জানিয়ে দুষ্কৃতীদের হামলা মুখে পড়েছিলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান। শনিবার চুঁচুড়ার অভিজাত এলাকা বড়বাজারে একটি ক্লাবের সামনে গুলিতে খুন হল এক দুষ্কৃতী।

সব মিলিয়ে হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়ায় সমাজবিরোধী দৌরাত্ম্যের বিরাম নেই। ফলে, পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শহরের সাধারণ মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, লোকসভা ভোটের পর থেকে এলাকায় দুষ্কৃতীদের আনাগোনা ফের বেড়েছে। সন্ধ্যার পর থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কোথা থেকে এত অস্ত্র আসছে এবং পুলিশ কেন তা উদ্ধার করতে পারছে না, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। তাঁরা চাইছেন, প্রশাসন কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করুক। না হলে আগামী দিনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে, এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেন অনেকে। বড়বাজারের এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘সন্ধ্যার পরে গঙ্গার ও পার থেকে কম বয়সী ছেলেরা এ পারে চলে আসে। উটকো ছেলেদের জন্য রাস্তায় বেরোতেও ভয় লাগে।’’

স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘‘দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য কড়া হাতে মোকাবিলার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে। কেউ দুষ্কৃতীদের প্রশ্রয় দিয়ে থাকলে দলমত নির্বিশেষে পুলিশ তাদেরও গ্রেফতার করুক।’’ পুলিশ কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদী অবশ্য জানান, বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করতে এবং দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। বাইরে থেকে আসা লোকজনের উপরে নজরদারির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

অনেকেই মনে করছেন, শনিবার রাতে দুষ্কৃতী প্রবীর হেলা ওরফে হাতকাটা মুন্না খুনের পিছনে এলাকা দখলের চেষ্টা কারণ হতে পারে। সূত্রের খবর, মুন্না-সহ কয়েক জন দুষ্কৃতী বাম আমলে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থেকে চুঁচুড়ায় রীতিমতো দাপুটে হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ২০১১ সালে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে পরিস্থিতি বদলে যায়। মুন্নারা গা-ঢাকা দেয়। তখন বড়বাজার-সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি ভাঙা থেকে প্রোমোটিংয়ের কাজ, টোটো থেকে টাকা তোলা— সব কাজেই শাসক দলের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি ছড়ি ঘোড়াতে শুরু করেন। পরে তিনি শাসকদলের নেতাও হয়ে ওঠেন। তাঁর ভয়ে অনেকেই এলাকায় টুঁ শব্দ করার সাহস পেতেন না।

লোকসভা ভোটে হুগলিতে তৃণমূল হেরে যাওয়ার পরে এই সব জায়গায় তৃণমূলের রাশ অবশ্য কিছুটা আলগা হয়। এর পরেই মুন্নার মতো কিছু দুষ্কৃতী ফের সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে। তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, ভোটের পরে এই সব দুষ্কৃতী বিজেপির হয়ে তৃণমূলের একাধিক দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে।

বিজেপি নেতা স্বপন পাল বলেন, ‘‘আমাদের দলে দুষ্কৃতীদের ঠাঁই নেই। সব দুষ্কৃতীই শাসক দলের বিভিন্ন গোষ্ঠীর ছত্রচ্ছায়ায় রয়েছে।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chinsurah Crimina Crime Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE