ভাঙা নদীবাঁধ সারানোর জন্য গ্রামবাসীরা এক রকম পদ্ধতির দাবি তুলছেন। কিন্তু সেচ দফতর চায় অন্য ভাবে বাঁধ সারাতে। দু’পক্ষের এই টানাপড়েনে পুরশুড়ার মির্জাপুরে দামোদরের ভাঙা নদীবাঁধ সংস্কারের কাজ এখনও শুরুই হল না। ফলে, গ্রামবাসীদের দুর্ভোগও কমেনি।
প্লাবনের জল নেমে গিয়েছে বেশ কিছুদিন। দিন দশেক হল মির্জাপুরে বাঁধ সংস্কারের প্রয়োজনীয় মালপত্র ফেলেছে সেচ দফতর। কিন্তু তার পরেই পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি তুলে গ্রামবাসীরা ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু করেন। বিডিও-র কাছে গণস্বাক্ষর সংবলিত অভিযোগও জানিয়েছেন তাঁরা। মির্জাপুরের রবীন্দ্রনাথ চন, বিমল হাইত, অনিল মণ্ডলদের মতো কয়েক জন গ্রামবাসীর দাবি, ‘‘সেচ দফতর নামমাত্র শালবল্লা দিয়ে খালি বালির বস্তা ফেলে বাঁধের ভাঙা অংশ ভরাট করতে চাইছে। সেই বালি ফের ধুয়ে গিয়ে বাঁধ ভাঙবে। বালির বদলে মাটি দিয়ে ভরাট হোক। তার উপর বোল্ডার পাইলিং হোক।’’
বিডিও অনির্বাণ রায় জানান, বিষয়টি সেচ দফতরের কাছে বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসা হবে। সেচ দফতরের চাঁপাডাঙা-মুণ্ডেশ্বরী ডিভিশনের সহকারী বাস্তুকার সোমনাথ ঘোষ বলেন, “কারিগরি বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের ধারণা নেই। তাঁরা নানা রকম দাবি করছেন। আমরা বাঁধটি টেঁকসই করারই ব্যবস্থা করছি। বিষয়টি নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমাধানের পথ খুঁজছি।”
সাম্প্রতিক প্লাবনে ডিহিবাতপুর পঞ্চায়েত এলাকার মির্জাপুর-বটতলায় দামোদরের প্রায় ১৫০ ফুট অংশ ভেঙে যায়। মির্জাপুর, ডিহিবাতপুর, আলাটি, দেউলপাড়ার মতো খান সাতেক গ্রাম প্লাবিত হয়। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মির্জাপুর গ্রামের ধাড়াপাড়া, চনপাড়া, হাইতপাড়া এবং মণ্ডলপাড়া। কিছু পাকা বাড়ি এবং কয়েকশো মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই চার পাড়ার মানুষই মূলত বাঁধ সংস্কারের পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি তুলছেন বলে অভিযোগ। বাঁধটি সংস্কার না-হওয়ায় পুরশুড়ার মূল রাস্তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া গ্রামগুলির ছাত্রছাত্রী, রোগী থেকে সাধারণ মানুষ— সকলকেই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিনই।
পুরশুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, ওই এলাকার তৃণমূল নেতা কিঙ্কর জানা বলেন, “সেচ দফতর বাঁধ সংস্কারের কাজ যে ভাবে করতে চাইছে, সেটা সেরা পথ। বিষয়টা আমরা এলাকার মানুষকে বোঝাচ্ছি। সমস্যা থাকবে না।” একই কথা জানিয়েছেন ডিহিবাতপুর পঞ্চায়েত প্রধান মণিকা ঢালি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy