এক গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকার একটি আবাসনে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সকালে। মৃতার নাম শিখা ঝা (৩০)। পুলিশ সূত্রে খবর, গোলাবাড়ি থানার কিংস রোডে একটি তিনতলা আবাসনের দোতলায় ফ্ল্যাট কিনেছিলেন সেনাবাহিনীর জওয়ান লালকুমার ঝা। স্ত্রী শিখাকে নিয়ে সেখানে থাকতেন তিনি। সম্প্রতি কর্মসূত্রে মথুরায় বদলি হন লালকুমার। সে কারণে শিখাকে জগদীশপুরে বাপের বাড়িতে রেখে গিয়েছিলেন তিনি। পুলিশ জানায়, ২ এপ্রিল লালকুমার ছুটি নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে এসেছিলেন। শিখাও এসে ছিলেন।
শিখার ভাই সৌরভ ঝা পুলিশকে জানিয়েছেন, ২ তারিখ তিনি দিদি-জামাইবাবুর সঙ্গে দেখা করতে তাঁদের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন। রাতে ফিরে আসেন। রবিবার শিখা ও লালকুমারকে বারবার ফোনে না পেয়ে ফের সৌরভ যান ওই ফ্ল্যাটে। গিয়ে তিনি দেখেন, ফ্ল্যাটের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। দু’টি তালা ঝুলছে। এর পরেই আবাসনের মালিককে খবর দেন সৌরভ। মালিক সানি জায়সবাল বলেন, ‘‘আমরা এসে দেখি ঘর থেকে গন্ধ বেরোচ্ছে। তখনই থানায় যাই। পুলিশ এসে তালা ভেঙে ঘরে ঢোকে। শোওয়ার ঘরে খাটের তলা থেকে শিখার দেহ উদ্ধার হয়।’’
পুলিশ জানিয়েছে, মোটা একটি কাপড় দিয়ে শিখার দেহ ঢাকা ছিল। দেহটি দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, দিন দুই আগে মারা গিয়েছেন শিখা। পুলিশের আরও অনুমান, ওই মহিলাকে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে।
হাওড়া পুলিশের এক কর্তা জানান, এই মৃত্যুর পিছনে লালকুমারেরই হাত রয়েছে বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। শিখার পরিজনদেরও অভিযোগ, শিখার সঙ্গে কারও অবৈধ সম্পর্ক ছিল বলে সন্দেহ করতেন লালকুমার। তিনিই তাঁকে খুন করেছেন। যদিও সেনাবাহিনীর ওই জওয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
উল্লেখযোগ্য, এক সপ্তাহ আগেই গোলাবাড়ি থানা এলাকাতেই কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন একটি কারখানা থেকে উদ্ধার হয় এক ঠিকাদারের দগ্ধ দেহ। সেই মৃত্যুর এখনও কিনারা হয়নি। তারই মধ্যে রবিবার সকালে এই ঘটনা। গত জানুয়ারি মাসেও গোলাবাড়ির বিবিবাগানে মহিলাদের কটূক্তির প্রতিবাদ করায় দুষ্কৃতীদের আক্রমণে খুন হন অরূপ ভাণ্ডারী নামের এক যুবক। তাই নিয়ে সরগরম হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতি।
গত কয়েক মাসে হাওড়ায় একের পর এক এমন ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, শহরের আইন-শৃঙ্খলার যে অবনতি হয়েছে, তা অরূপের মৃত্যুতেই প্রমাণ হয়েছিল। তার পরেও পুলিশের হুঁশ ফেরেনি। যদিও হাওড়া পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই মহিলার মৃত্যুর ঘটনা দিয়ে প্রমাণ হয় না যে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, অরূপ ভাণ্ডারীর ঘটনায় সকলেই গ্রেফতার হয়েছে। কারখানার মধ্যে ঘটনারও তদন্ত চলছে। দ্রুত তার কিনারা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy