—প্রতীকী ছবি।
শ্রীরামপুর অঞ্চলে ফের কি মাথা চাড়া দিচ্ছে ডেঙ্গি! জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা যত বাড়ছে, ততই ঘনাচ্ছে আশঙ্কার মেঘ। একই পরিবারের তিন জন জ্বরে আক্রান্ত বলে খবর মিলেছে। তাঁদের দু’জনের রক্তে এনএসওয়ান জীবাণুও মিলেছে। জ্বরে আক্রান্ত পুরসভার বিভিন্ন এলাকার মানুষ।
যদিও জ্বরের খবর আসেনি বলে দাবি করেছেন শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘পুরকর্মীরা বাড়ি বাড়ি নিয়ম করে জ্বরের রিপোর্ট আনতে যাচ্ছেন। তা হলে কি এলাকার বাসিন্দারা জ্বরের খবর ঠিক ভাবে তাঁদের জানাচ্ছেন না? আমরা পুরকর্মীদের বিষয়টি ফের ভাল করে দেখতে বলব।’’
জ্বরের খবর যে চাপা থাকার কথা নয়, তা জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। অনেকেই বলছেন, এলাকার বাসিন্দারা জ্বর নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন। ফলে জ্বর হয়েছে না জানার কথা নয় পুরপ্রধানের। যদিও পুরকর্মীদের কাজ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেক বাসিন্দা। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘পুরকর্মীরা আসেন, কাগজে সই করিয়ে নিয়ে চলে যান। রোগী খোঁজার কাজ ওঁরা করেন না। মশা মারার রাসায়নিক স্প্রে করার কথা সাত দিনে একবার, কিন্তু তা ছড়ানো হয় ১৫ দিন অন্তর।’’
পুরসভার ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে জ্বরে আক্রান্ত কয়েক জনের রক্ত পরীক্ষায় এনএসওয়ান জীবাণু ধরা পড়েছে। শ্রীরামপুরের ঠাকুরদাসবাবু লেনের বাসিন্দা দীপক দিনকর এবং তাঁদের মেয়ে দিস্তু দিনকরের রক্তে এনএসওয়ান জীবাণু মিলেছে। দীপকবাবুর স্ত্রী আর্তি দিনকরও জ্বরে আক্রান্ত। তাঁরও রক্তে প্লেটলেট নেমে গিয়েছিল মারাত্মক।
শ্রীরামপুরের চিকিৎসক প্রদীপকুমার দাস বলেন, ‘‘বহু মানুষই জ্বরে আক্রান্ত। অনেক অবশ্য ঋতু পরিবর্তন জনিত সমস্যায় আক্রান্ত। কিন্তু তা বলে সবটা হালকা ভাবে নেওয়ার মতো পরিস্থিতি নয়।’’ শুধু ঠাকুরদাসবাবু লেন নয়, চাতরা এলাকাতেও জ্বর ছড়িয়েছে। পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শ্রীপর্ণা ভাদুড়ির রক্তেও এনএসওয়ান জীবাণু মিলেছে। তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল শ্রীরামপুরের শ্রমজীবী হাসপাতালে।
কয়েক বছর আগে শ্রীরামপুরে ডেঙ্গি মারাত্মক আকার নিয়েছিল। সে বছর মৃত্যুও হয়েছিল কয়েকজনের। শেষ পর্যন্ত শ্রীরামপুরে মহামারি ঘোষণা করে রাজ্য সরকার।
তখনই পরিস্থিতি বাগে আনতে পুর কর্তৃপক্ষ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে বাড়ি বাড়ি হেলথ্ কার্ড চালু করেন। পুর কর্মীদের নিয়ে তৈরি করা হয় বিশেষ দল। তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জ্বরের খবর আনতে শুরু করেন। পাশাপাশি এলাকায় আবর্জনা, জমা জল নিয়েও রিপোর্ট দেন। যে সব পরিবার উদাসীন তাঁদের সতর্ক করে নজরদারিও চালানো হয়। সে সময় ফলও মিলেছিল হাতেনাতে। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল।
কিন্তু আবার চোখ রাঙাচ্ছে জ্বর। চিকিৎসকদের অনেকের আশঙ্কা ডেঙ্গি চরিত্র বদল করে থাকতে পারে এলাকায়। এত মানুষের রক্তে এনএসওয়ান জীবাণু পাওয়া যাওয়ায় শঙ্কিত তাঁরা। তাই পতঙ্গবিদদের এলাকা সমীক্ষা করানো জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy