ঘাটের কাছে নামল ধস। শনিবার শান্তিপুরে। নিজস্ব চিত্র
ভাঙনের জেরে বন্ধ হয়ে গেল শান্তিপুর-গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাট। ভাঙনের জেরে শনিবার বন্ধ রাখা হয় ফেরি চলাচল। যতক্ষণ পর্যন্ত জেটি ঠিক হচ্ছে ততদিন যাত্রী পরিবহণ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে শান্তিপুর পুরসভা।
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে ভাঙন ধরে শান্তিপুরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শান্তিপুর গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকা। এ দিন সকাল সোয়া ১০টা নাগাদ এই এলাকায় ভাঙন শুরু হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়েরা। সেই সময়ে বেশ কিছু মানুষ ভাগিরথীতে তর্পণ করছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, আগে থেকেই সেখানে পাড়ের মাটি অল্প অল্প করে খসে পড়ছিল। জল পাক খাচ্ছিল। প্রথমে নদী পাড়ের চাঙড় খসে পড়তে থাকে। ভাঙনের জেরে তলিয়ে যায় ঘাটের ধারে থাকা একটি বড় গাছও। ভাঙনের জেরে ফেরিঘাটের জেটির একটি স্তম্ভের পাশ থেকেও মাটি সরে যায়। ফেরিঘাটে সেই সময়ে যাত্রীরা ছাড়াও তর্পণ করতে আসা মানুষজনের ভীড় ছিল। আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়।
শান্তিপুরের আশানন্দ স্ট্রিটের বাসিন্দা সুশান্ত মঠ এ দিন সকালে ঘাটে গিয়েছিলেন তর্পণ করতে। তিনি বলেন, “তর্পণ করতে জলে নামার সময়েই দেখি জল পাক খাচ্ছে। আর পাড়ের মাটিও অল্প অল্প করে ধসে পড়ছে। সেখান থেকে সরে আসি। একটু পরেই গাছটাও জলে পড়ে যায়। আশপাশের পাড়ের মাটিও ধসে পড়তে থাকে।”
ভাঙনের জেরে জেটির স্তম্ভের পাশের মাটি ধসে যাওয়ার পরই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় শান্তিপুর-গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাট। এ দিন সকালেই ঘটনাস্থলে যান শান্তিপুরের পুরপ্রধান অজয় দে। তিনি বলেন, “জেটি স্তম্ভের পাশের মাটি ধসে যাওয়ায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে ফেরি এ দিন বন্ধ করে দেওয়া হয়। যানবাহন পারাপার আপাতত বন্ধ থাকবে। বিষয়টি সেচ এবং পরিবহণ দফতরকে জানিয়েছি।”
এই ফেরিঘাট দিয়ে প্রতিদিন নদিয়া এবং হুগলির মধ্যে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। দু’টি জলযান এখানে যাতায়াত করে। পাশাপাশি যানবাহন বহনের জন্য আছে একটি ভেসেল। এ দিন সকাল থেকেই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফেরিঘাটের কর্মী বিকাশ সাহা বলেন, “তখন অনেক যাত্রীরই আনাগোনা। হঠাৎ একটা বিকট আওয়াজ শুনি। এরপরই দেখি পাশের বড় গাছটা ধসে পড়ছে। তখনই ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।” এই ফেরিঘাট পার করে মানুষজনের পাশাপাশি মাছ, আনাজ সবই পারাপার করা হয়। ভাঙনের পর সবই বন্ধ। বিকাশ বলেন, “ঘাটের কর্মী থেকে শুরু করে মাঝি দিয়ে এখানে ৩৪ জন কর্মী। পাশাপাশি অনেকেই নদিয়া এবং হুগলির নানা জায়গায় যাতায়াত করেন কর্মসূত্রে। এদিন ঘাট বন্ধ থাকায় সবাইকেই সমস্যায় পড়তে হল।”
কিছুদিন আগেও এই এলাকার আশপাশ দিয়ে ছোটখাটো ভাঙন হয়েছে। সেই সময়ে বেশ কিছু কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপরে ফের এ দিনের ভাঙন। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার থেকেই ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধে কাজ শুরু হবে। আশপাশের ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলিতেও দ্রুত কাজ শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy