Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

চক্ষুদানের বার্তা নিয়ে উত্তরবঙ্গে হুগলির চার

মরণোত্তর চক্ষুদানে সচেতনতা বাড়াতে এবং চক্ষু সংগ্রহ ও প্রতিস্থাপনে উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরির দাবি নিয়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জে‌লায় ঘুরলেন হুগলি জেলার চার বাসিন্দা। 

প্রয়াস: বালুরঘাটে চলছে প্রচার। নিজস্ব চিত্র

প্রয়াস: বালুরঘাটে চলছে প্রচার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:২৫
Share: Save:

গত বছর দক্ষিণবঙ্গ। এ বার অভিযান চলল উত্তরবঙ্গে।

মরণোত্তর চক্ষুদানে সচেতনতা বাড়াতে এবং চক্ষু সংগ্রহ ও প্রতিস্থাপনে উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরির দাবি নিয়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জে‌লায় ঘুরলেন হুগলি জেলার চার বাসিন্দা।

মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য মাইক বাজানো যায়নি। খালি গলাতেই হল পথসভা। লিফলেট বিলি করা হল। গত বারের মতোই অনন্ত সার, উত্তমকুমার সেন, সুরজিৎ শীল এবং বুদ্ধদেব মাঝির সফর সঙ্গী ছিল দু’টি মোটরবাইক। শনিবার অভিযান শেষ হল।

জাঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা অনন্তবাবুরা স্থানীয় রাজবলহাট কালচারাল সার্কেল ও সেবায়ন নামে দু’টি সংগঠনের সদস্য। সুরজিৎ তাঁত বোনেন। বুদ্ধদেব অ্যাম্বুল্যান্সচালক। উত্তম গ্রামীণ চিকিৎসক। অনন্ত সরকারি কর্মী। তাঁরা মৃতের চোখ সংগ্রহের কাজের সঙ্গে যুক্ত। মরণোত্তর চক্ষু ও দেহদান নিয়ে নিরন্তর প্রচার করেন। শ্রীরামপুর সেবাকেন্দ্র ও চক্ষুব্যাঙ্কের সহযোগিতায় গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাজবল‌হাটে তাঁদের অভিযানের সূচনা করেন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সদন ঘোষ, কালচারাল সার্কেলের সভাপতি চিকিৎসক প্রভাস দাস এবং অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক মধুসূদন দাস।

রামপুরহাট, মুর্শিদাবাদ, ফরাক্কা, মালদহ, বালুরঘাট, রায়গঞ্জ, শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলে। বুদ্ধদেববাবুরা জানান, রামপুরহাট, বালুরঘাটে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যৌথ ভাবে প্রচার চালানো হয়। পথসভা হয়। বালুরঘাট থেকে নিজের মোটরবাইক অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে সুরজিতদের সঙ্গী হন ইসলামপুরের রক্তদান আন্দোলনের কর্মী গোবিন্দ অধিকারী।

সুরজিৎ বলেন, ‘‘মরণোত্তর চক্ষুদান নিয়ে দক্ষিণবঙ্গে মোটামুটি কাজ হলেও উত্তরবঙ্গ অনেক পিছিয়ে। সঠিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা গেলে এবং প্রচার হলে ওখানে কর্নিয়াজনিত কারণে দৃষ্টিহীন বহু মানুষের দৃষ্টি ফিরবে। এ জন্য মানুষের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগও দরকার।’’

রায়গঞ্জ মেডিক্যা‌ল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে গত কয়েক বছর ধরে বন্ধ হয়ে থাকা চক্ষুব্যাঙ্ক খোল‌ার দাবিতে সেখানকার সুপারিন্টেন্ডেন্ট এবং অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার ওই দাবিতে সেখানে আয়োজিত একটি গণ সমাবেশেও উপস্থিত ছিলেন উত্তমবাবুরা। সুরজিৎ বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালে চক্ষু প্রতিস্থাপনের সব পরিকাঠামোই ছিল। কিন্তু সব নষ্ট হতে বসেছে। এটা দেখে খুবই খারাপ লাগল।’’ তাঁদের বক্তব্য, বেসরকারি ব্যবস্থা থাকলেও উত্তরবঙ্গে সরকারি পরিকাঠামোয় এখন চক্ষু

প্রতিস্থাপনের জায়গা নেই। ফলে সংগ্রহ করা চোখ কলকাতায় নিয়ে আসতে হয়। বহু ক্ষেত্রেই এত দূরে চোখ আনা সম্ভব হয় না। ফলে গোটা প্রক্রিয়া ধাক্কা খাচ্ছে। শান্তিনিকেতনে কিছু মানুষ মরণোত্তর চক্ষুদান নিয়ে প্রচারের কাজে উৎসাহ দেখিয়েছেন। সেখানে চোখ সংগ্রহের জন্য দুর্গাপুর ব্লাইন্ড রিলিফ সোসাইটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

শনিবার বিকেলে হুগলির শ্রীরামপুর সেবাকেন্দ্র ও চক্ষুব্যাঙ্কের তরফে ওই চার জনকে সংবর্ধিত করা হয়। সংগঠনের সভাপতি চক্ষু চিকিৎসক সুশোভন অধিকারী, শ্রীরামপুর মহিলা থানার ওসি বর্ণালী গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Eye Donation Awareness Campaign
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE