কল্যাণ: জয়ের পর। ছবি: দীপঙ্কর দে
জয় এল। তবে সহজে নয়।
বৃহস্পতিবার সকালে গঙ্গা লাগোয়া শ্রীরামপুর কলেজে গণনা কেন্দ্রে প্রত্যয়ের সঙ্গে ঢুকেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বেলা যত বেড়েছে, দুঁদে আইনজীবীর প্রত্যয় বদলেছে উদ্বেগে। শেষ পর্যন্ত জিতলেও, মোটেই সহজ হয়নি দু’বারের সাংসদের জয়। শেষ পর্যন্ত ৯৮ হাজার ৭০০ ভোটে হারালেন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী দেবজিৎ সরকারকে।
কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘শ্রীরামপুরের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ যে তৃতীয় বারের জন্য সংসদে পাঠানোর জন্য। অনেকেই বলে ছিলেন শ্রীরামপুরে না কি তৃতীয় বারের কেউ সাংসদ হন না। মানুষের ভালবাসায় সেই মিথও আমি এবার ভাঙতে পারলাম। আমাকে যাঁরা ভোট দিয়েছেন আর যাঁরা দেননি, সকলের কাছেই আমি কৃতজ্ঞ। ’’
এ দিন এক একটি রাউন্ডের ফলাফল যে ভাবে এগিয়েছে, তাতে কল্যাণের ভোট ম্যানেজারদের বুকে কাঁপন ধরে গিয়েছিল। একটা সময় নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি’র দেবজিৎ সরকারের থেকে পিছিয়েও পড়েছিলেন তিনি। দশ রাউন্ডের পর ৬৮ হাজারের ব্যবধানে এগিয়ে থেকেও মুখোমুখি হননি সংবাদমাধ্যমের। স্পষ্ট জানিয়ে দেন, জয়ের শংসাপত্র হাতে না নিয়ে, কোনও কথাই বলবেন না।
সার্বিক ভাবে জিতলেও, কল্যাণবাবুর চিন্তা বাড়িয়ে শ্রীরামপুর বিধানসভায় তৃণমূল হেরে গিয়েছে ২৫০৩ ভোটে। চাঁপদানি এবং উত্তরপাড়া বিধানসভায় যথাক্রমে ৩,৫২৫ ও ৩,৪৯১ ভোটে কোনও রকমে উতরেছে তৃণমূল। সেখানে সিপিএমের ভোট যেমন কমেছে, তেমনিই উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে গিয়েছে বিজেপির ভোট। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, বাম ভোটের বড় অংশ এবার দলের উপর আস্থা বিসর্জন দিয়ে চলে গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে। তৃণমূলের দলীয় কোন্দলে বিরক্ত সাধারণ মানুষের একটি অংশও বিজেপির দিকে ঝুঁকেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। উত্তরপাড়া বিধানসভায় দলের অন্দরের গোষ্ঠী কোন্দল বারে বারেই রাস্তা নেমে এসেছে। শ্রীরামপুরেও সেই একই ছবি।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ এবং বাম ভোটের পরিবর্তন, এই দুইয়ে মিলেই শ্রীরামপুরের হেভিওয়েট তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান কমেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। দলের অন্দরেই অনেকে এটাকে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ঝড়ের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy