পারাপার: রবিবার রাতে সেতুর উপর দেখা গিয়েছে পণ্যবাহী ভারী গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
রামকৃষ্ণ সেতুর অবস্থা খারাপ। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে শুক্রবার পূর্ত দফতরের সুপারিশে জেলাশাসক সেই সেতুতে একমাসের জন্য পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সে নিষেধাজ্ঞা থাকছে শুধু দিনের আলো। রাত নামতেই ভারী পণ্যবাহী গাড়ি পার হচ্ছে মুণ্ডেশ্বরী। বদলে অবশ্য গুনতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। বখরা নাকি ভাগ করে নিচ্ছেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীদের একাংশ এবং স্থানীয় কিছু ‘মাতব্বর’।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন মহকুমা পূর্থ দফতরের (নির্মাণ-১) বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড়। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। আমরা এসডিপিও-র সঙ্গে কথা বলব।’’ সোমবার অবশ্য এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলেই মন্তব্য করেছেন এস়ডিপিও কৃশানু রায়। তিনি বলেন, ‘‘এ রকম কোনও অভিযোগ পাইনি। পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখব। প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’
‘উৎকোচ’ দিতে হচ্ছে সে কথা স্বীকার করেছেন গোঘাটের শান্তিপুর, কামরাপুকুর, বেঙ্গাই, চাতরা এলাকার আলু ও ধান ব্যবসায়ীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘গোঘাট থেকে কলকাতা যেতে এই সেতু পারাপার ছাড়া বিকল্প নেই। তাই বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যেতে হচ্ছে। গাড়ি পিছু ৫০০-১০০০ টাকাও গুঁজেতে হচ্ছে পুলিশের হাতে।’’
শুধু তাই নয়। এই পদ্ধতি দিনের পর দিন চলতে থাকলে আলুর দাম বাড়তে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। সমিতির রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তাফা বলেন, “গোঘাট-সহ হুগলির মোট আলু উৎপাদনের ৭০ শতাংশই কলকাতা যায়। সেতু বিড়ম্বনায় এরই মধ্যে ব্যবসায় মন্দা শুরু হয়েছে। পুলিশের হয়রানি আমাদের পোহাতে হবে কেন?”
তিনি জানান, তাঁরা রাজ্য সরকার এবং জেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন, অত্যাবশ্যক খাদ্যপণ্য হিসাবে আলু বা আনাজের একটি করে গাড়ি যেন ১০ মিনিট অন্তর রামকৃষ্ণ সেতু পেরোতে দেওয়া হয়।
মহকুমাশাসক লক্ষ্মীভব্য তানিরু অবশ্য বলেন, ‘‘একমাস আমরা কোনও ভাবেই গাড়ি চালানোর অনুমতি দিতে পারব না। সেতু সংস্কারের পরে ভেবে দেখা হবে। অমান্য করার অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy