মে মাসের গোড়ায় হাওড়ার শালিমারে গুলি করে খুন করা হয়েছিল হরিনন্দ ভগত নামে এক ট্রাকমালিককে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে কেটে গিয়েছে প্রায় তিন সপ্তাহ। কিন্তু এখনও নির্দিষ্ট কোনও সূত্র পুলিশের হাতে আসেনি। ফলে খুনি রয়ে গিয়েছে অধরাই। তবে তদন্তকারীদের সন্দেহ, কোনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে হরিনন্দকে খুন করা হয়নি। খুনের ঘটনা আচমকাই ঘটে গিয়েছে এবং এর পিছনে এক বা একাধিক ব্যক্তি জড়িত।
কারণ খুনের ঘটনার আগে ওই ট্রাকমালিক একটি ঘরে যে আরও কয়েক জনের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেছিলেন, সেই প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা। তাই সে রাতে ওই ঘরে হরিনন্দের সঙ্গে আর কে কে ছিলেন, এখন তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। খোঁজ চলছে ঘরের মালিকের।
গত ৪ মে রাতে কলকাতা বন্দরের শ্রমিক আবাসনে একটি ঘরে গুলিবিদ্ধ হন হরিনন্দ। আদতে বিহারের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি থাকতেন নৈহাটিতে। ৪ তারিখ সকালে তিনি শালিমারে এসেছিলেন। রাতে তাঁর থাকার কথা ছিল শ্রমিক আবাসনে, গ্রামেরই এক প্রতিবেশীর ঘরে। কিন্তু ওই রাতেই হরিনন্দকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পেট চেপে ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এর পরে রক্তাক্ত অবস্থায় হরিনন্দকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তদন্তকারীরা জানান, পরিবহণ ব্যবসার পাশাপাশি, হরিনন্দ শ্রমিক সরবরাহের ঠিকাদারিও করতেন। সে কারণেই তাঁর শালিমারে নিয়মিত যাতায়াত ছিল।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাটি শিবপুর থানা এলাকায় হওয়ায় ওই থানার পাশাপাশি তদন্ত করছে সিটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও। প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দারা খুনের পিছনে দু’টি সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছেন। প্রথমত, বিহারের যে গ্রামে হরিনন্দ থাকতেন সেই গ্রামের সম্পত্তি নিয়ে কারও সঙ্গে বিবাদ খুনের কারণ হতে পারে। দ্বিতীয়ত, শালিমারে কারও সঙ্গে টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে গোলমালের জেরেও এই খুন হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান। তবে পুলিশ আপাত ভাবে নিশ্চিত, গ্রামের যে প্রতিবেশীর বাড়িতে থাকতেন ওই ব্যবসায়ী, তাঁকে ধরা গেলেই পুরো ঘটনা অনেকটাই স্পষ্ট হবে। কিন্তু ওই ব্যক্তি এখনও গা-ঢাকা দিয়ে থাকায় তদন্তও কার্যত থমকে দাঁড়িয়েছে।
যদিও হাওড়া সিটি পুলিশের এসিপি (দক্ষিণ) গুলাম সারওয়ার বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট প্রমাণ না পেলে তো কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব নয়। তদন্ত চলছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুত খুনির খোঁজ মিলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy