Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নবান্নের পাশেই নিরাপত্তার অভাব বোধ বাসিন্দােদর

অভিযোগ, রাত বাড়লেই বাড়ির সামনে এসে মত্ত দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালাচ্ছে। হুমকি দিচ্ছে, এমন কেউ নেই যে তাদের আটকাতে পারে। এমনকি, পুলিশেরও সেই ক্ষমতা নেই বলে দাবি ওই দুষ্কৃতীদের।

নজরদারি: সম্প্রতি দুষ্কৃতী তাণ্ডবের পরে ওঙ্কারমল জেটিয়া রোডে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

নজরদারি: সম্প্রতি দুষ্কৃতী তাণ্ডবের পরে ওঙ্কারমল জেটিয়া রোডে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

দেবাশিস দাশ
হাওড়া শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৯ ০৩:০০
Share: Save:

এলাকার পুরনো বাসিন্দারা অন্যত্র চলে যেতে চাইছেন। প্রয়োজনে বাড়ি বিক্রি করে দিতেও আপত্তি নেই তাঁদের। অভিযোগ, রাত বাড়লেই বাড়ির সামনে এসে মত্ত দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালাচ্ছে। হুমকি দিচ্ছে, এমন কেউ নেই যে তাদের আটকাতে পারে। এমনকি, পুলিশেরও সেই ক্ষমতা নেই বলে দাবি ওই দুষ্কৃতীদের।

যে সে জায়গায় নয়, এমন পরিস্থিতি রাজ্যের প্রধান সচিবালয় নবান্নের সামনেই তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

গত ৪ অগস্ট রাতে নবান্নের বাস টার্মিনাসের সামনে এক দল দুষ্কৃতীর হাত থেকে ছেলেকে বাঁচাতে নিজের লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিভলভার থেকে শূন্য গুলি চালাতে হয়েছিল রাজ্যের প্রাক্তন বক্সিং চ্যাম্পিয়ন অমিতকুমার সামন্তকে। ওঙ্কারমল জেটিয়া রোডের সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে পুলিশি তৎপরতা বাড়ে। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, তখনকার মতো গা ঢাকা দিয়েছিল স্থানীয় দুষ্কৃতী ভিকি ও তার দলবল। ওই ঘটনার পরে এক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও ভিকিকে ধরা যায়নি।

এলাকার বাসিন্দা দেবাশিস কুঠে বলেন, ‘‘গত ৪ তারিখের পরে পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠায় দুষ্কৃতীরা এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। প্রকাশ্যে তোলাবাজিও বন্ধ হয়ে যায়। বিশেষ করে সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরে ওঙ্কারমল জেটিয়া রোড এবং তারাপদ চ্যাটার্জি রোডে কাউকে আর তাণ্ডব করতে দেখা যায়নি।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৪ অগস্টের ঘটনার পরে পুলিশ এলাকায় চারটি সিসি ক্যামেরা লাগায়। আরও দু’টি ক্যামেরা লাগানোর কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। উপরন্তু যে ঠিকাদার ক্যামেরা লাগিয়েছিলেন তিনি কয়েক দিন আগে অজ্ঞাত কারণে ক্যামেরাগুলি খুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বাসিন্দারা বাধা দিলে ওই ব্যক্তি পালিয়ে যান।

গত কয়েক দিন ধরে এলাকায় ফের দুষ্কৃতীদের উৎপাত বাড়ায় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা চেয়ে তাঁরা স্থানীয় শিবপুর থানায় গণস্বাক্ষর করা অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। অমিতবাবুর অভিযোগ, ‘‘কয়েক দিন ধরে পুলিশি তৎপরতা হঠাৎ কমে যাওয়ায় রাত হলেই ফের তাণ্ডব শুরু করে দিয়েছে ভিকির দলবল। আগের মতোই মত্ত অবস্থায় এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ির সামনে বোতল ভেঙে, গালিগালাজ করে নানা রকম হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে।’’ রাতে বাসিন্দারা আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরোতে পারছেন বলে জানিয়েছেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার আশ্রয়ে থাকার জন্যই ভিকিকে পুলিশ ধরছে না। তারই ইশারায় ফের দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে।

হাওড়ার ডিসি (দক্ষিণ) স্বাতী ভাঙালিয়া অবশ্য পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ দুষ্কৃতীদের খোঁজ করছে। কিছুটা সময় লাগছে কিন্তু অভিযুক্তেরা ধরা পড়বেই। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nabanna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE