Advertisement
০২ মে ২০২৪

নিষেধ উড়িয়ে হাওড়ায় যত্রতত্র বিক্রি শব্দবাজি 

অলিগলিতে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি বন্ধ করতে কলকাতার ধাঁচে হাওড়াতেও এ বছর তৈরি হয়েছে বাজি বাজার। যদিও বাজি বিক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ, যে উদ্দেশ্যে হাওড়ার তিন জায়গায় এই বাজি বাজার করেছে প্রশাসন, তা কার্যত ব্যর্থ হয়েছে।

নিষিদ্ধ শব্দবাজির সম্ভার। ফাইল চিত্র।

নিষিদ্ধ শব্দবাজির সম্ভার। ফাইল চিত্র।

দেবাশিস দাশ
শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৩৮
Share: Save:

অলিগলিতে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি বন্ধ করতে কলকাতার ধাঁচে হাওড়াতেও এ বছর তৈরি হয়েছে বাজি বাজার। যদিও বাজি বিক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ, যে উদ্দেশ্যে হাওড়ার তিন জায়গায় এই বাজি বাজার করেছে প্রশাসন, তা কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। কারণ, হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট এলাকার বহু জায়গাতেই অবাধে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ বাজি। পুলিশ কয়েক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করলেও বহু জায়গাতেই চলছে বাজি বিক্রি। তার মধ্যে চকলেট বোমা, দোদোমা ও লঙ্কা ফটকার মতো নিষিদ্ধ বাজিও রয়েছে। রবিবার রাতেই ব্যাঁটরা এলাকার হেম চক্রবর্তী লেনের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ টাকার নিষিদ্ধ বাজি। বাজি বাজারগুলি থেকেও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে প্রচুর নিষিদ্ধ বাজি। তবে পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা সত্ত্বেও প্রথম বারের বাজি বাজার যথেষ্ট সফল বলেই মনে করছে হাওড়া পুরসভা।

গত বছর পরিকল্পনা করে বাজি বাজার না করা গেলেও এ বার বালি, ডুমুরজলা ও ঘাসবাগান মাঠে বাজি বাজার তৈরি করা হয়। তিনটি জায়গা মিলে তৈরি হয় ৭০০টি স্টল। সামগ্রিক উদ্যোগে সাহায্য করে জেলা প্রশাসন ও হাওড়া সিটি পুলিশ। ওয়ান উইন্ডোর মাধ্যমে দ্রুত বাজি বিক্রির অস্থায়ী লাইসেন্সের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে বাজি বাজারগুলিতে পুলিশি নজরদারির যাবতীয় ব্যবস্থা করে জেলা প্রশাসন ও হাওড়া সিটি পুলিশ। বাজি বাজারগুলিতে বিক্রিবাটাও ভাল হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, বাজি বাজার তৈরির সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেই হাওড়ার প্রতিটি থানা থেকে মাইক-ভ্যান নিয়ে অলিগলিতে বাজি বিক্রেতাদের সতর্ক করা হয়। ঘোষণা করা হয়, শুধু

ডুমুরজলা, বালির দেশবন্ধু ক্লাবের মাঠ এবং ঘাসবাগানের মাঠে বাজি বিক্রি করা যাবে।

কিন্তু অভিযোগ, এর পরেও মধ্য হাওড়া, উত্তর হাওড়া ও বালির বিভিন্ন জায়গায় বাজির পসরা নিয়ে বিক্রি করতে দেখা গিয়েছে

দোকানদারদের। ঘাসবাগান বাজি বাজারের এক বিক্রেতার অভিযোগ, বাজি বাজারের মধ্যেই অনেকে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি করছে। পুলিশ অবশ্য খবর পেলেই সেই বাজি বাজেয়াপ্ত করেছে। নিষিদ্ধ বাজি বিক্রির জন্য রবিবার রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও পুলিশ রবিবারই হাওড়ার ডুমুরজলা বাজি বাজারে কয়েকটি স্টলে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করেছে এই ধরনের নিষিদ্ধ বাজি। এ ছাড়া সোমবারই চ্যাটার্জিহাট থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ডুমুরজলা বাজি বাজার থেকে বাজেয়াপ্ত করেছে প্রচুর পরিমাণ নিষিদ্ধ বাজি। যার মধ্যে রয়েছে কয়েক প্রকার শেল ও বড় তুবড়ি।

ডুমুরজলার বাজি বিক্রেতা তাপস মাঝি বলেন, ‘‘বাজি বাজার করা হলেও এর উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে। কারণ, আমাদের নিজেদের দোকানে বসতে না দেওয়া হলেও বহু জায়গায় দোকান করে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি হচ্ছে। এটা বন্ধ না করলে বাজি বাজার করে লাভ কী?’’ বিক্রেতাদের অভিযোগ, যে ১০৬টি নিষিদ্ধ বাজির তালিকা পুলিশের পক্ষ থেকে স্টল মালিকদের দেওয়ার কথা ছিল, তা ঠিক মতো বিলি না করায় সমস্যা হচ্ছে। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা নিষিদ্ধ বাজির তালিকা বিক্রেতাদের দিয়েছি। তা সত্ত্বেও যাঁরা বিক্রি করছেন, আমরা বাজেয়াপ্ত করছি। বাজি বাজারগুলিতে সারাক্ষণ নজরদারি করা হচ্ছে। থানাগুলিও চারদিকে তল্লাশি চালাচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকটি জায়গা থেকে লক্ষাধিক টাকার নিষিদ্ধ বাজিও উদ্ধার হয়েছে।’’

হাওড়া পুরসভার মেয়ের রথীন চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘কয়েকটি পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে ঠিকই, কিন্তু প্রথম বারের বাজি বাজার সফল হয়েছে। দোকানদারেরা পানীয় জল ও বায়ো টয়লেটের জন্য আবেদন করেছেন। সেগুলি ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE