দু’পক্ষই নাছোড়। ফলে, রাজ্যের চটকল ধর্মঘট নিয়ে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে বিরোধী বাম-ডান দলগুলির শ্রমিক সংগঠনের।
দাবি না-মেটায় ১ মার্চ থেকে রাজ্যে অনির্দিষ্টকাল চটকল দর্মঘটরে ডাক দিয়েছে বিরোধী শ্রমিক সংগঠনগুলি। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি ধর্মঘটে সামিল হয়নি। তাদের দাবি, তারাও শ্রমিকদের দাবি আদায়ের জন্য লড়ছে। তবে চটকল খোলা রেখে আলোচনার মাধ্যমেই তা আদায় করতে চায় তারা।
এই অবস্থায় কাল, মঙ্গলবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডেকেছে শ্রম দফতর। সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে সব সংগঠনগুলি। আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন বলেন, ‘‘ধর্মঘট ডেকে শ্রমিকদেরই ক্ষতি করা হচ্ছে। আমাদের দাবি, শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন মাসে ২৪ হাজার টাকা করা হোক। চটকল খোলা রেখেই আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় করব।’’ পক্ষান্তরে, বিজেপি-র শ্রমিক সংগঠন বিএমএস-এর নেতা রমেশ সিংহ বলেন, ‘‘আলোচনায় দাবি না-মিটলে ধর্মঘট ছাড়া কোনও পথ খোলা নেই।’’ সিটু নেতা অনাদি সাহুও বলেন, ‘‘মিল মালিকেরা বুঝে গিয়েছেন, সরকার তাঁদের পাশে রয়েছে। মিল বন্ধ থাকলে ঘরে হাঁড়ি চড়বে না-জেনেও শ্রমিকেরা ধর্মঘটে সামিল হতে চাইছেন। সরকার কি জোর করে কাজে যোগ দেওয়াবে?’’
রাজ্যে চটকলের সংখ্যা ৭৪টি। শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় আড়াই লক্ষ। গঙ্গার ধার বরাবর উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলি জেলাতেই চটকলের সংখ্যা বেশি। শ্রমিকদের অভিযোগ, ১৯৭২ সালে তাঁদের মূল বেতন (বেসিক) বেড়ে হয় ২৫৭ টাকা। তার পরে আর তা বাড়েনি। দীর্ঘদিনের প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটিও বকেয়া রয়েছে। অবসরের পরে তাই প্রাপ্য না পেয়ে অর্থাভাবে দিন কাটছে অনেকের।
কয়েক বছর ধরে শ্রমিকদের বেতনবৃদ্ধি, বকেয়া মেটানো-সহ কয়েক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে আইএনটিটিইউসি-সহ প্রায় সব সংগঠনই। গত বছরের জানুয়ারিতে বিরোধীদের মোট ২১টি সংগঠন মিলে চটকল-মালিক এবং শ্রম দফতরের কাছে দাবি-সনদ জমা দেয়। কিন্তু সমস্যা না-মেটায় তখনই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল তারা। কিন্তু ত্রিপাক্ষিক আলোচনার আশ্বাসে তখনকার মতো ধর্মঘট পিছিয়ে দেয় তারা।
শ্রমিকদের অভিযোগ, এ বার দিন কয়েক আগে সব দাবি উড়িয়ে দিয়ে মালিকদের সংগঠন কেবলমাত্র নতুন যোগ দেওয়া শ্রমিকদের বেতনবৃদ্ধি করে। ফের আন্দোলন নামেন শ্রমিকেরা। গত মাসে দু’দফায় শ্রম দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকে শ্রম দফতর। তাতেও সমাধান অধরা থাকায় ২১টি সংগঠনের পক্ষ থেকে চটকল-মালিক এবং শ্রম দফতরকে ধর্মঘটের নোটিস ধরানো হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy