Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

শ্রমিকের অপমৃত্যু, পুলিশের দ্বারস্থ স্ত্রী

এক শ্রমিকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় কারখানার দুই আধিকারিককে দায়ী করে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন তাঁর স্ত্রী।

অপমৃত্যু: কারখানার সামনে অবস্থান শ্রমিকদের। ছবি: দীপঙ্কর দে

অপমৃত্যু: কারখানার সামনে অবস্থান শ্রমিকদের। ছবি: দীপঙ্কর দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডানকুনি শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৯ ০৫:০০
Share: Save:

এক শ্রমিকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় কারখানার দুই আধিকারিককে দায়ী করে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন তাঁর স্ত্রী।

শুক্রবার বিকেলে ডানকুনির বন্দের বিল হুদুকপাড়ার বাসিন্দা, শ্রীপদ গায়েন (৪৬) নামে ওই শ্রমিকের ঝুলন্ত মৃতদেহ মেলে তাঁর ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে। তিনি শ্রীরামপুরের একটি বিস্কুট কারখানায় সাত বছর ধরে কাজ করছিলেন। মাসখানেক ধরে কারখানাটি বন্ধ। সেখানে একটি নামী সংস্থার বিস্কুট তৈরি হত। মাসদুয়েক আগে অবশ্য ওই সংস্থার পুণের কারখানায় বদলি করা হয়েছিল শ্রীপদবাবুকে।

শনিবার ডা‌নকুনি থানায় দায়ের করা অভিযোগে মৃতের স্ত্রী মিতালিদেবী জানান, স্বামী শ্রীরামপুরের কারখানায় ‘ওভেন ম্যান’ হিসেবে কাজ করতেন। পুণেতে তাঁকে দিয়ে অন্য কাজ করানো হচ্ছিল। কিন্তু তিনি খাপ খাওয়াতে পারছিলেন না। সম্প্রতি সেখান থেকে ফিরে ডানকুনির কারখানাটির দুই কর্তাকে বিষয়টি জানান শ্রীপদবাবু। কিন্ত কর্তৃপক্ষের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, কলকাতায় তাঁকে কাজ দেওয়া যাবে না। এতে তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। সেই কারণেই আত্মঘাতী হন।

মিতালিদেবীর অভিযোগ, ‘‘কারখানার দুই কর্তার মানসিক চাপে ও আত্মহত্যা করতে বাধ্য হল।’’ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে। অনুসন্ধান করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য মেলেনি। তবে তাঁদের তরফে মৃতের বাড়িতে গিয়ে দেখা করা হয় বলে ওই পরিবার সূত্রের খবর।

ওই শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় এ দিন সকালে কারখানার গেটের সামনে শ্রমিকদের একাংশ বিক্ষোভ দেখান। সৌরভ দাস নামে এক শ্রমিকের কথায়, ‘‘বেশ কিছু শ্রমিককে জোর করে স্বেচ্ছাবসর দেওয়ার প্রক্রিয়ার সময়েই ওঁকে পুণেতে পাঠানো হয়। যে কাজ পারেন, তা ওঁকে করতে দেওয়া হচ্ছিল না। সেই কারণেই অবসাদে ভুগছিলেন। এখানে এসে বিষয়টি জানালে কর্তৃপক্ষ দুর্ব্যবহার করেন। সেই জন্য হতাশা বেড়ে যায়। ওঁর মৃত্যুর জন্য কর্তৃপক্ষই দায়ী।’’ ওই পরিবারের সুরক্ষা এবং স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার দাবি তোলেন বিক্ষোভকারীরা। অবিলম্বে কারখানা খোলার দাবিও ওঠে। কর্তৃপক্ষের লোকজনকে কারখানায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।

স্থানীয় রিষড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মৃত্যুঞ্জয় মেটে বলেন, ‘‘শ্রীপদবাবুর পরিবারকে দেখতে হবে কারখানা কর্তৃপক্ষকে। ওঁর স্ত্রীর কাজের ব্যবস্থা করা হোক। অভিযোগের তদন্ত করে পুলিশ ব্যবস্থা নিক। উৎপাদন চা‌লু করে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE