নজরে: বালি পাঠকপাড়া সংলগ্ন রেললাইন ধরে টহলদারি পুলিশের। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
দফায় দফায় এক দলের উপরে আর এক দলের আক্রমণ। কখনও রাস্তায় ফেলে মারধর, তো কখনও আবার বাড়ি ভাঙচুর। এমনকি, পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ারও অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠি চালাতে হয় র্যাফকে। এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশবাহিনী। বৃহস্পতিবার রাজ্যের তিনটি আসনে বিধানসভা উপনির্বাচনের ফল বেরোনোর পরে রাত থেকেই তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের সংঘর্ষের জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল বালি।
পুলিশ সূত্রের খবর, বালির পাঠকপাড়ার একটি মন্দিরের সামনের মাঠে ওই দিন সন্ধ্যা থেকেই বিজয় উৎসব পালন করছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। চলছিল মিষ্টি বিলি, আতসবাজি ফাটানো। সেই সময়েই গন্ডগোলের সূত্রপাত বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে শাসক দল ও বিজেপি। সংঘর্ষের জেরে দু’পক্ষেরই কয়েক জন জখম হয়েছেন।
তৃণমূলের অভিযোগ, ওই দিন রাত পৌনে আটটা নাগাদ যখন মিষ্টি বিতরণ চলছিল, তখন স্থানীয় কয়েক জন বিজেপি সমর্থক সেখানে এসে কটূক্তি করতে শুরু করেন। তারই প্রতিবাদ করেন তৃণমূল সমর্থকেরা। তার পরেই দু’পক্ষের বচসা শুরু হয়, যা গড়ায় হাতাহাতিতে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সমীর নন্দী বলেন, ‘‘ওঁরা অহেতুক আমাদের উদ্দেশ্যে কটূক্তি করতে শুরু করেন। গালিগালাজও করা হয়। এর পরেই গন্ডগোল বেধে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে বিষয়টি সামাল দেয়।’’ যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপি।
বিজেপি-র বালি মণ্ডলের সভাপতি রাজা গোস্বামীর দাবি, মিষ্টি বিতরণ যেখানে হচ্ছিল, সেই এলাকায় তাঁদের দলের তিন জন কর্মী দাঁড়িয়ে ছিলেন। তৃণমূলের কয়েক জন যুবক আচমকাই এসে তাঁদের রড ও লাঠি দিয়ে মারধর করতে থাকেন। তিন বিজেপি কর্মী ভয়ে পালিয়ে গিয়ে সামনে থাকা অস্থায়ী পার্টি অফিসে আশ্রয় নেন। রাজার অভিযোগ, ‘‘ওই পার্টি অফিসের সামনে এসে তৃণমূলের কর্মীরা বাইক, সাইকেল ভাঙতে শুরু করেন। আমাদের কয়েক জন কর্মীকে বাইরে বার করে দিয়ে চড়, লাথি, ঘুষি মারা হয়।’’ এর পরে ওই রাতেই বিজেপি কর্মীরা বালি থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
রাতে থানা থেকে ওই এলাকায় ফিরে বিজেপি সমর্থকেরা তাণ্ডব শুরু করেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের। তাঁদের দাবি, সমীর নন্দী-সহ আরও দুই তৃণমূল কর্মীর বাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার পাশাপাশি লাঠি, রড দিয়েও ভাঙচুর চালানো হয়। সমীরবাবু বলেন, ‘‘রাতে ওঁরা পরিকল্পিত ভাবে আবার হামলা চালান। খবর পেয়ে পুলিশবাহিনী এলেও তারা দূরে দাঁড়িয়ে থাকে। আর বিজেপি কর্মীরা একের পর এক বাড়িতে হামলা চালান।’’ সেই সময়ে স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূল সমর্থক শ্যামল বসাককে রড দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। তিনি হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি।
পুলিশ জানায়, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ পরিস্থিতি সামলাতে এলাকায় যায় বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ। অভিযোগ, সেই সময়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে রেললাইনের পাথর ছোড়েন বিজেপি সমর্থকেরা। এর জন্য ঘটনাস্থল থেকে দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়। অভিযোগ অস্বীকার করে রাজা বলেন, ‘‘বিজেপি-র কেউ রাতের তাণ্ডবের সঙ্গে জড়িত নয়। ওই সময়ে আমরা সকলেই থানায় ধর্নায় বসেছিলাম।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘‘বালির ওই জায়গায় অনেক দিন ধরেই বিজেপি অশান্তি পাকাচ্ছে। পুলিশকে বলেছি, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy