দেউলপুর বোর্ড গার্লস প্রাইমারি স্কুল থেকে বাঁধের বাজার পর্যন্ত রাস্তার দৈর্ঘ্য প্রায় ২ কিলোমিটার। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে ওই রাস্তা পাকা করতে গিয়ে পাশের জনস্বাস্থ্য দফতরের জলের পাইপ লাইন তুলে ফেলা হয়। সেটা প্রায় বছর দশেক আগের ঘটনা। রাস্তার উন্নতি হলেও তুলে ফেলা পাইপ লাইন আজও পাতা হয়নি। ফলে পরিস্রুত পানীয় জল পাচ্ছেন না পাঁচলার দেউলপুর পঞ্চায়েতের দেউলপুর, বলরামপুর-সহ কয়েকটি এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা। তাঁদের ভরসা সেই পুকুর, নলকূপ।
জলের পাইপ লাইন বসানোর জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা জনস্বাস্থ্য দফতর, পঞ্চায়েত-সহ প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। এ নিয়ে আবার প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, পূর্ত দফতর পাইপ লাইন বসানোর জন্য ৭ লক্ষ টাকাও মঞ্জুর করে। সেই টাকা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে দিয়েও দেয় তারা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই পাইপ লাইন বসানো হল না। কিন্তু কেন? জনস্বাস্থ্য দফতরের দাবি, রাস্তা পাকা তো হয়েছেই। তার উপরে দেউলপুর বোর্ড প্রাথমিক স্কুলের আশপাশে ও কয়েকটি জায়গায় রাস্তার প্রায় উপরেই বাড়িঘর হয়ে গিয়েছে। ফলে ফের পাইপ লাইন বসাতে গেলে রাস্তা কাটতে হবে বা পাইপ লাইনের পথ বদলাতে হবে। কিন্তু পূর্ত দফতর রাস্তা কাটতে চাইছে না। দেউলপুর পঞ্চায়েতকে কিছু একটা ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছিল বলে দাবি, জনস্বাস্থ্য দফতরের। অভিযোগ, দীর্ঘদিন কেটে গেলেও পঞ্চায়েত উদ্যোগী হয়নি। যদিও পঞ্চায়েতের বর্তমান কর্মকর্তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। প্রধান প্রাণনাথ দে বলেন, ‘‘বরং আমরাই তাদের বারবার বলেছি সমস্যা সমাধানের জন্য। টাকার সমস্যা দেখিয়ে তারাই কাজ পরে করবে বলে জানিয়েছে। যার জেরে সমস্যার সমাধান আজও হল না।’’ যদিও জনস্বাস্থ্য দফতরের জেলা আধিকারিক চম্পক ভট্টাচার্য সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে দেউলপুর, বলরামপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ওই সব এলাকায় এখনও ট্যাপকলে পাইপ সংযোগ রয়েছে। কিন্তু রিজারর্ভারের সঙ্গে পাইপ লাইনের সংযোগ না থাকায় ট্যাপকল থেকে জল পড়ছে না। শুধু তাই নয়, পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে ট্যাপকলগুলি। সংস্কারের অভাবে কোথাও ট্যাপকল, চাতাল ভেঙে গিয়েছে। জলের জন্য এলাকাবাসী ছুটছেন নলকূপ বা পুকুরে। তাঁদের ক্ষোভ, নলকূপের সংখ্যা অপ্রতুল। পুকুরের অবস্থাও সব জায়গায় ভাল নয়। ট্যাপকল থেকে জল নেই টানা কয়েক বছর। দেউলপুরের লক্ষ্মীকান্ত ঘোষ, বলরামপুরের চন্দ্রকান্ত মল্ল, ঝর্না সর্দাররা বলেন, ‘‘সারা বছরই জলের সমস্যায় পড়ি। তবে গরমের সময় খুবই জল সঙ্কটে পড়ি আমরা। আমাদের কথা ভেবে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy