Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

হরিণখোলায় হামলার জের, বিজেপি নেতা ছুরিকাহত

আরামবাগের হরিণখোলায় বাজার করতে এসে ছুরিকাহত হলেন লাগোয়া আমগ্রামের বাসিন্দা এক বিজেপি নেতা। বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ ওই ঘটনা ঘটে। এলাকা দখল নিয়ে সোমবার রাত থেকে বিজেপি-তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত ছিল হরিণখোলা-১ পঞ্চায়েতের পূর্ব কৃষ্ণপুর গ্রাম। মূলত বিজেপির হাতে আক্রান্ত হন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকেরা।

হাসপাতালে জখম বিজেপি নেতা।—নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতালে জখম বিজেপি নেতা।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:১৫
Share: Save:

আরামবাগের হরিণখোলায় বাজার করতে এসে ছুরিকাহত হলেন লাগোয়া আমগ্রামের বাসিন্দা এক বিজেপি নেতা। বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ ওই ঘটনা ঘটে। এলাকা দখল নিয়ে সোমবার রাত থেকে বিজেপি-তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত ছিল হরিণখোলা-১ পঞ্চায়েতের পূর্ব কৃষ্ণপুর গ্রাম। মূলত বিজেপির হাতে আক্রান্ত হন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকেরা। বোমাবাজি, তৃণমূল কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ থেকে লুঠপাট কিছুই বাদ যায়নি। বুধবারের ঘটনা তারই পাল্টা বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত।

বিজেপির সংখ্যালঘু মণ্ডলের সহ-সভাপতি রাজু মল্লিক নামে ওই নেতার অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কতীরাই এই হামলা চালিয়েছে। তারা তাঁকে খুন করতে চেয়েছিল। গুরুতর আহত ওই নেতাকে প্রথমে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল এবং পরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই ঘটনায় বিজেপি ও তৃণমূল দুই তরফেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সকালে আমগ্রাম সংলগ্ন হরিণখোলা বাজারে বাজার করতে গিয়েছিলেন রাজু মল্লিক। তাঁর অভিযোগ, কোনওন প্ররোচনা ছাড়াই আচমকা বাজারে তাঁকে ঘিরে ধরে শেখ ইনতিয়াজ, শেখ হুমায়ন, আয়ুব খান এবং কালি ওরফে টুনি মোল্লা নামে তৃণমূলের লোকজন। পূর্ব কৃষ্ণপুরের ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে তাঁকে মারধর করতে থাকে। তিনি জানান, ওদের সঙ্গে আরও জনা ১৫ ছেলে ছিল। প্রত্যেকের হাতেই ছিল ছুরি ও লাঠি। আচমকাই পিছন থেকে তাঁর কোমরে ছুরিকাঘাত করা হয়। আহত অবস্থায় তাঁকে বাজারের ব্যবসায়ীরা উদ্ধার করে বাড়িতে খবর দেন।

বিজেপি-র আরামবাগ জেলা সভাপতি অসিত কুণ্ডুর অভিযোগ, “আমাদের জোরদার সংগঠনের মুখে দিশাহারা হয়ে তৃণমূল খুনের রাস্তায় নেমেছে। সাধারণ মানুষই এর প্রতিরোধ করবেন। অন্যদিকে নিজের বিধানসভা এলাকায় এই অশান্তি নিয়ে পুড়শুড়ার তৃণমূল বিধায়ক পারভেজ রহমান বলেন, “আমাদের দলের কেউ রাজুকে ছুরি মারেনি। খবর নিয়েছি সে বাজারে দাদাগিরি করছিল। ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে গিয়ে টেবিলের কাচ ভেঙে ঢুকে যায়।”

প্রসঙ্গত, গত দু’দিন ধরে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে গ্রাম দখলের লড়াইয়ে তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে পূর্ব কৃষ্ণপুর গ্রামের কর্তৃত্ব। বিজেপির প্রভাবে ওই গ্রামের লাগোয়া অরুণবেড়া, গোলামিচক, দোরজিপোতা এবং আমগ্রামও হাতছাড়া হওয়ার মুখে। এলাকার এক সময়ের দাপুটে সিপিআই নেতা জয়নাল খাঁ নিজে বিজেপিতে যোগ না দিলেও তাঁর অনুগামীরা এখন বিজেপিতে। এই গ্রামগুলিতে বিজেপির দখলদারি বজায় রাখতেই জয়নালের অনুগামীরা বিজেপিতে গিয়ছেন। এর ফলেই ওই এলাকা বেশ কয়েকটি গ্রামে তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি অনেকটাই দুর্বল হয়েছে। সেই সুযোগেই পূর্ব কৃষ্ণপুরে বিজেপির লোকজন হামলা করে বলে অভিযোগ। তারই পাল্টায় এলাকা দখল করতে নেমে তৃণমূল বুধবার হামলা চালায় বলে অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE