‘শান্ত’ জঙ্গলমহলে হঠাৎ আলোড়ন ফেলে দিল সিপিআই (মাওবাদী)-র ব্যানার। পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলপাহাড়ির কিছু এলাকায় শুক্রবার পাওয়া গিয়েছে এমনই কিছু ব্যানার। জঙ্গলমহলকে মাওবাদী হিংসামুক্ত করা তাঁর সরকারের অন্যতম সাফল্য বলে বারবার দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন ঝাড়গ্রাম জেলার ভারপ্রাপ্ত এসপি ভারতী ঘোষেরও দাবি, “মাওবাদী বলে কিছু নেই। কিছু বাজে লোক চাঁদা আদায়ের জন্য এ সব করছে।” এলাকাবাসীদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, হিংসাত্মক কার্যকলাপ বন্ধ হলেও মাওবাদীদের আনাগোনা বন্ধ হয়নি।
পুলিশেরই একটি সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ড লাগোয়া এলাকায় ফের মাওবাদীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। গত বুধবার চেকাম জঙ্গলে মাওবাদীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে প্রাণ হারান কোবরা জওয়ান বিকাশ সূত্রধর। সেই ঘটনাস্থল থেকে বেলপাহাড়ির দূরত্ব বড়জোর পাঁচ কিলোমিটার।
সেই বেলপাহাড়িরই জলট্যাঙ্ক, বামুনডিহার মতো বেশ কয়েকটি এলাকায় শুক্রবার সকালে সিপিআই (মাওবাদী)-র নামে ব্যানার দেখতে পান বাসিন্দারা। পরে পুলিশ এসে সেগুলি খুলে নেয়। সিপিআই (মাওবাদী)-র দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘পিপলস্ লিবারেশন গেরিলা আর্মি’-কে (পিএলজিএ) ‘পিপলস্ লিবারেশন আর্মি’-তে (পিএলএ) পরিণত করতে সংগঠন বৃদ্ধির ডাক দেওয়া হয়েছে ব্যানারগুলিতে।
কিষেণজির মৃত্যু এবং তার পরে কিছু নেতার আত্মসমর্পণের জেরে মাওবাদী কার্যকলাপ স্তিমিত হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি ঝাড়খণ্ড লাগোয়া ডাকাই, উখুলডোবা, সিঁদুরিয়া, আস্তাজুড়ির জঙ্গল এলাকা দিয়ে মাওবাদী স্কোয়াড বেলপাহাড়ি ও লালগড়ে যাতায়াত করছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর। পুলিশের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, সংগঠনে নতুন মুখ নিতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে মাওবাদীরা। এ দিন উদ্ধার হওয়া ব্যানারে ‘ভর্তি অভিযান’-এর ডাক সে কারণেই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে গোয়েন্দা পুলিশের একাংশ।
এ দিনই তড়িঘড়ি বেলপাহাড়িতে যান দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ, জেলা সাধারণ সম্পাদক দুর্গেশ মল্লদেব। দীনেনবাবু বলেন, “কারা ওই ব্যানার দিয়েছে, তা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের জঙ্গলমহলে উন্নয়ন বানচাল করার অপচেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না।” আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর বেলপাহাড়িতে তাঁরা ‘মহামিছিল’ করবেন বলেও জানিয়েছেন দীনেনবাবু।