Advertisement
০৩ মে ২০২৪
খড়্গপুরে ডেঙ্গি রোধে পুরসভায় ফের বৈঠক
Dengue

মশা দমনের পথ খুঁজছে রেলশহর

আক্রান্ত একশো ছুঁইছুঁই। পরিস্থিতি দেখে ডেঙ্গি মোকাবিলায় ফের বৈঠক হল খড়্গপুরে। পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিদের নিয়ে ওই বৈঠকে সচেতনতা বাড়ানোর উপরই জোর দেওয়া হয়।

অপরিষ্কার: খড়্গপুরে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে রেল আবাসন এলাকায় জমে আবর্জনা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

অপরিষ্কার: খড়্গপুরে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে রেল আবাসন এলাকায় জমে আবর্জনা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:৫০
Share: Save:

মাত্র চার দিনের ব্যবধানে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত একশো ছুঁইছুঁই। পরিস্থিতি দেখে ডেঙ্গি মোকাবিলায় ফের বৈঠক হল খড়্গপুরে। পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিদের নিয়ে ওই বৈঠকে সচেতনতা বাড়ানোর উপরই জোর দেওয়া হয়। পাশাপাশি, যে সব জায়গায় বেশি নোংরা- আবর্জনা জমে থাকছে, সেই সব জায়গার মালিকদের নোটিস পাঠানোর ব্যাপারেও আলোচনা হয়। বৈঠকে ছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা, পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার, অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম নিয়োগী, খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার প্রমুখ। ছিলেন রেলশহরের কাউন্সিলররাও। বৈঠক শেষে জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “খড়্গপুরে অনেক আগে থেকেই সচেতনতামূলক প্রচার শুরু হয়েছে। পুরসভা ও সাধারণ মানুষকেও আরও সচেতন হতে হবে।’’

এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেঙ্গির প্রভাব সবথেকে বেশি খড়্গপুরেই। জেলায় এখনও পর্যন্ত মশাবাহিত এই রোগে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। দু’জনই রেলশহরের বাসিন্দা। ডেঙ্গি মোকাবিলায় নজরদারি কমিটি, টাস্কফোর্স গড়ে অভিযান চলছে। তারপরেও ডেঙ্গিতে রাশ টানা যাচ্ছে না। ফলে, উদ্বেগ বাড়ছে। এ বার ডেঙ্গির মরসুমে শহরের হাজার তিনেক মানুষ মশাবাহিত এই রোগের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালে শয্যা না পেয়ে অনেকে বাড়িতেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “আমরা খড়্গপুর পুরসভাকে পরিচ্ছন্নতার কাজ আরও নিবিড় ভাবে করতে বলেছি।’’ আর পুরপ্রধান প্রদীপবাবুর দাবি, “পরিচ্ছন্নতার কাজে পুরসভা এখন সব থেকে বেশি জোর দিয়েছে। কোথাও নোংরা- আবর্জনা জমে থাকলে দেখলেই তা পরিস্কার করা হচ্ছে।’’

ডেঙ্গি মোকাবিলায় পুরসভা যথাযথ কাজ করছে কি না তা দেখতে প্রতিদিনই নজরদারি কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছেন। পুরসভার সাফাইয়ের কাজে অবশ্য সন্তুষ্ট নন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। জেলার উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধানের কথায়, “এই সময়ের মধ্যে খড়্গপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছি। পুরসভা কাজ করছে। তবে বেশ কিছু এলাকায় জল জমে থাকছে, রাস্তাতেও আবর্জনা পড়ে রয়েছে। এটা আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।’’

ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে ইতিমধ্যে রাজ্যের ধমক খেয়েছে জেলা। কেন ডেঙ্গি প্রতিরোধে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, চিঠি পাঠিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে তা জানতে চেয়েছিল রাজ্য। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জবাব পাঠিয়ে দেন। রাজ্যের একাংশ স্বাস্থ্যকর্তা মনে করেছেন, ডেঙ্গির প্রকোপ যে বাড়তে পারে, তার পূর্বাভাস আগেই জেলার কাছে ছিল। খড়্গপুরের নানা জায়গায় মশার লার্ভার খোঁজ মিলেছিল। তাও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়নি। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার অবশ্য দাবি, “প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই করা হয়েছে। দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে মাইকে প্রচার, হোর্ডিং, ব্যানার থেকে বাসিন্দাদের নিয়ে পদযাত্রা— সবই হয়েছে।’’ খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপবাবু বলেন, “মশা নিধনে অভিযান চলছে। পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE