ছবি: সংগৃহীত
ডেঙ্গি মোকাবিলায় রাজ্য সরকার তৎপর হলেও জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভায় সেই তৎপরতার লেশমাত্র দেখা যাচ্ছে না।
এগরা পুরসভা এলাকায় এবং পটাশপুরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হলেও এলাকায় দেখা কোনও স্বাস্থ্যকর্মীর দেখা মিলছে না বলে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। ফলে নতুন করে এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছে স্থানীয়রা।
ডেঙ্গি নিয়ে পুরসভা এবং পঞ্চায়েত এলাকায় সচেতনতা শিবির হয়েছে। সচেতনতা শিবির হলেও সচেতন নয় খোদ পুরসভা ও ব্লক স্বাস্থ্য দফতর। গত এক মাসে এগরা পুরসভা এবং পটাশপুর ২ ব্লকে দু’জনের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এগরা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে কসবা এগরার বাসিন্দা বছর চল্লিশের বলরাম কামিল্যা কর্মসূত্রে বাইরে ছিলেন। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে ফেরার পর জ্বরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বলরামকে এগরা এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বলরামের রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া যায়। তাঁর রক্তের রিপোর্টেও তার উল্লেখ রয়েছে।
অপর দিকে পটাশপুর-২ ব্লকের খড়াই কোটবাড় গ্রামের শেখ হানিফা নামে বছর আঠারোর এক কিশোর যুবক পড়াশোনার সূত্রে কলকাতায় ছিল। পরিবারের দাবি, ১২ নভেম্বর সে বাড়িতে ফিরে আসে। ১৬ নভেম্বর সে জ্বরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার পরিবার সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বেসরকারি ডায়গনস্টিক সেন্টারে রক্ত পরীক্ষার পরে হানিফের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার বিষযে জানা যায়। চিকিৎসার জন্য তাকে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে বর্তমানে সে অনেকটাই সুস্থ। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও পুরসভা কিংবা গ্রামীণ এলাকায় আজ পর্যন্ত কোনও মেডিক্যাল টিমতে দেখা যায়নি। এলাকায় নতুন করে কারও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে কিনা সেই খবরও কেউ নিতে আসেনি।
মেডিক্যাল টিম এলাকায় না আসায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় মানুষ। তাঁদের আশঙ্কা, ফের নতুন করে না কেউ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন! আর সে জন্য তাঁরা চান, এলাকায় মেডিক্যাল টিম এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখুক। প্রসঙ্গত হাসপাতালে কোনও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগী থাকলে হাসপাতালকে সেই রোগীর বিস্তারিত তথ্য স্বাস্থ্যভবনে পাঠাতে হয়। স্বাস্থ্যভবন সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিককে সতর্ক করে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সংশ্লিষ্ট ব্লক কিংবা পুর এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর গ্রামে মেডিক্যাল টিম পাঠিয়ে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ নেন। প্রয়োজনে ওই সব এলাকায় নতুন করে যাতে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা না বাড়ে সে জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যভবনের সেই তৎপরতা দেখা যায়নি বলে অভিযোগ।
শেখ হানিফার বাবা হায়দাল আলি জানান, ছেলে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার পরে আজ পর্যন্ত কোনও স্বাস্থ্যকর্মী এলাকায় আসেননি। কেমন আছে সেই খোঁজটুকুও প্রশাসনের কেউ নেয়নি। নতুন করে যদি কেউ আক্রান্ত হয় সেই আতঙ্ক রয়েছি।’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই মণ্ডল বলেন, ‘‘দু’টি জায়গায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। প্রয়োজন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy