ফের বড়সড় রদবদল হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশে। একসঙ্গে বদলি হলেন ৩৯ জন। এর মধ্যে দুই থানার ওসি রয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় এই বদলির নির্দেশ হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, শীঘ্রই নির্দেশ কার্যকর হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “দুই থানার ওসি বদল হয়েছে। আরও কয়েকজন পুলিশকর্মীর বদলি হয়েছে। এটা রুটিন বদলি।”
ঘটনায় শোরগোল পড়েছে জেলা পুলিশের অন্দরে। যে কোনও মুহূর্তে কোপে পড়তে হতে পারে ভেবে আরও কয়েকজন পুলিশ অফিসার শঙ্কিত বলে পুলিশ মহলের এক সূত্রে খবর। ঘনিষ্ঠমহলে কয়েকজন অফিসার সেই আশঙ্কার কথা প্রকাশও করেছেন। এক সময় যাঁরা ভারতী ঘোষের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত ছিলেন, পরিস্থিতি বুঝে তাঁরা ভারতী-ঘনিষ্ঠতা দূরে সরিয়ে রাখার বার্তা দিতে শুরু করেছেন। যদিও এতে কতটা বরফ গলবে সে নিয়ে সন্দিহান পুলিশের একাংশই।
পুলিশের এক সূত্রে খবর, যে ৩৯ জনের বদলির নির্দেশ হয়েছে তার মধ্যে ৩১ জনই এতদিন মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন। এ বার তাঁরা থানায় বদলি হয়েছেন। বিষয়টি তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে পুলিশ মহল। এক পুলিশকর্মীর কথায়, “সকলেই চান থানায় ডিউটি করতে। লাইনে থাকা আর থানায় থাকার মধ্যে কোথাও যেন একটা ফারাক রয়েছে।’’ ডেবরা এবং দাসপুর থানার ওসি বদল হয়েছে। ডেবরার ওসি ছিলেন চিত্ত পাল। কেশিয়াড়ি থানায় তাঁর বদলি হয়েছে। দাসপুরের ওসি ছিলেন জয়ন্ত চক্রবর্তী। খড়্গপুর টাউন থানায় তাঁর বদলি হয়েছে। অন্য দিকে, দাসপুরের ওসি হয়েছেন সুব্রত বিশ্বাস। খড়্গপুর লোকাল থানায় ছিলেন তিনি। ডেবরার ওসি হয়েছেন আশিস জৈন। মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় ছিলেন তিনি। পুলিশের এক সূত্রে খবর, আশিসবাবুরা ভারতী-বৃত্তে ছিলেন না। পুলিশ সূত্রে খবর, যে ৩৯জনের বদলি হয়েছে তার মধ্যে ১৫ জন এসআই, ১৯ জন এসএসআই আর ৫ জন কনস্টেবল। আগেও জেলার একাধিক থানায় রদবদল হয়েছে। খড়্গপুরের (লোকাল) ওসি রাজশেখর পাইনের বদলি হয়েছে মোহনপুর থানায়। সবংয়ের ওসি বিশ্বরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলি হয়েছে খড়্গপুরে (লোকাল)। বিশ্বরঞ্জনবাবু খড়্গপুরের (লোকাল) ওসি হয়েছেন। সবংয়ের ওসি হয়েছেন অমিত অধিকারী। অমিতবাবু শালবনি থানায় ছিলেন।
পুলিশের এক সূত্রের মতে, এই বদলির পিছনেও জেলা থেকে ভারতী-ছায়া মুছে ফেলার ইঙ্গিত রয়েছে। কম গুরুত্বের পদে বদলি করার দু’দিনের মধ্যে রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলেন ভারতী। এরপর নানা জল্পনা শুরু হয়েছিল। ভারতীর ইস্তফা মঞ্জুরও হয়। পরে একের পর এক পদক্ষেপে রাজ্য এবং জেলা পুলিশ বুঝিয়ে দিতে শুরু করে, পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারতী-জমানা শেষ। এই সময়ের মধ্যে একাধিক পুলিশ অফিসারের উত্তরবঙ্গে বদলি হয়েছে। তালিকায় নাম রয়েছে সন্তোষ মণ্ডল, সুশান্ত রাজবংশীদের। সন্তোষবাবু দীর্ঘদিন খড়্গপুরের এসডিপিও ছিলেন। সুশান্তবাবু মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার আইসি ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy