বিকাল ৪টে নাগাদ সেখানে হাজির হন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্য মঞ্জু মান্নার স্বামী বিশ্বজিৎ মান্না এবং তাঁর দুই সঙ্গী
শিক্ষাঙ্গানে রাজনৈতিক নেতাদের ‘দাদাগিরি’ এ রাজ্যে নতুন ঘটনা নয়। বিভিন্ন কলেজে এ ধরনের ঘটনার বহু অভিযোগ হামেশাই সামনে আসে। এবার সেই তালিকায় নতুন সংযোজন কোলাঘাট। ওই এলাকার মানুয়া হাইস্কুলে ঢুকে মদ্যপ অবস্থায় তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে কোলাঘাট থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শিক্ষক দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের বিষয়ে মঙ্গলবার বিকেলে একটি বৈঠক হচ্ছিল মানুয়া হাইস্কুলে। প্রধান শিক্ষিকার ঘরে ওই আলোচনায় হাজির ছিলেন স্কুলে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অভিযোগ, বিকাল ৪টে নাগাদ সেখানে হাজির হন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্য মঞ্জু মান্নার স্বামী বিশ্বজিৎ মান্না এবং তাঁর দুই সঙ্গী। কোনও রকম প্ররোচনা ছাড়ায় তাঁরা তাণ্ডব শুরু করেন এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মারধর করেন। শিক্ষক-শিক্ষাদের দাবি, সকলেই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন।
এর পরে অভিযুক্তেরা প্রধান শিক্ষিকার ঘরে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। তখন ভিতরেই ছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বিশ্বজিতেরা তাঁদের প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকেন বলেও অভিযোগ। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে অভিযুক্তেরা স্কুল চত্বর ছেড়ে চলে যান। তারপর প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না মাইতি কোলাঘাটের বিডিওকে ফোনে ঘটনার কথা জানান। বিডিও’র খবর দেন কোলাঘাট থানায়। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ কোলাঘাট থানার পুলিশ এসে আটকে থাকা শিক্ষক- শিক্ষিকাদের উদ্ধার করে। প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না বলেন, ‘‘বৈঠক চলছিল। সেই সময় বিশ্বজিৎ মান্না নামে একজন অভিভাবক দলবল নিয়ে স্কুলে আসেন। স্কুলে ঢুকেই ওঁরা আমাদের মারধর শুরু করেন। আমরা ওঁদের হামলার কারণ কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি। স্কুল থেকে বেরলে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হয়। তিনজন অভিযুক্তের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। স্কুলে পুলিশি নিরাপত্তার আবেদনও জানানো হয়েছে।’’ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোলাঘাট থানার ওসি কাশীনাথ চৌধুরী।
বিশ্বজিৎ এলাকায় তৃণমূলের নেতা হিসাবে পরিচিত। ঘটনার পর থেকে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁর স্ত্রীও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে দলের নেতার স্বামীর এমন ঘটনায় নাম জড়ানোয় অস্বস্তিতে তৃণমূল। দলের কোলাঘাট ব্লক সভাপতি মদনমোহন মিশ্র বলেন, ‘‘বিষয়টি এইমাত্র শুনলাম। যেই এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকুক না কেন, তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। অভিযুক্ত আমাদের দলের হলেও আইন আইনের পথে চলবে।’’ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মধুরিমা মণ্ডল বলেন, ‘‘এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দলের উর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy