Advertisement
১১ মে ২০২৪

ভোটের মুখে ধরপাকড়

মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত খড়্গপুর শহর ও গ্রামীণ থানার পুলিশ এই তল্লাশি চালায়। পৃথক তিনটি এলাকায় তল্লাশিতে দু’জন ব্যক্তির থেকে টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

তল্লাশিতে উদ্ধার হওয়া টাকা।  নিজস্ব চিত্র

তল্লাশিতে উদ্ধার হওয়া টাকা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০৪
Share: Save:

নির্বাচনের মুখে তল্লাশি চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পাশাপাশি অভিযান চালিয়ে বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৯ লক্ষ টাকা।

মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত খড়্গপুর শহর ও গ্রামীণ থানার পুলিশ এই তল্লাশি চালায়। পৃথক তিনটি এলাকায় তল্লাশিতে দু’জন ব্যক্তির থেকে টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করে আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ।

শহরে চালু রয়েছে নির্বাচনী আচরণ বিধি। একজন ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের আধিকারিককে সামনে রেখে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। শহরে ঢোকার মুখে চৌরঙ্গি, নিমপুরা, কৌশল্যা, প্রেমবাজার-সহ বিভিন্ন এলাকায় চলছে নাকা তল্লাশি। এ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ দমন করতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হানা দিচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকার বেশি নিয়ে শহরে চলাফেরায় নজরদারি চালানো হচ্ছে। সঙ্গে অপরাধ দমনে বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র। সেই মতো খড়্গপুর গ্রামীণের চৌরঙ্গিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে তল্লাশি চলছিল। রাতে রূপনারায়ণপুরের বাসিন্দা ওমপ্রকাশ মেহেতা নামে এক ব্যক্তি গাড়িতে শহরে ঢুকছিলেন। গাড়ি দাঁড় করিয়ে তল্লাশির চালাতেই প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। কিন্তু টাকার উপযুক্ত নথি না দেখাতে পারায় বাজেয়াপ্ত হয় ওই টাকা। একইভাবে বুধবার দুপুরে খড়্গপুর টাউনের কৌশল্যা এলাকায় নাকা তল্লাশি চলাকালীন দাঁড় করানো হয় একটি গাড়ি। ওই গাড়িতে থাকা পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের এরাশাল এলাকার বাসিন্দা সুজিত দাসের থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়। মুরগি ব্যবসার জন্য টাকা নিয়ে খড়্গপুরে আসছিলেন বলে পুলিশকে জানায় ওই ব্যক্তি। তবে এত পরিমাণ টাকার উৎসের প্রমাণ না দেখাতে পারায় ওই টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। মহকুমাশাসক তথা খড়্গপুরের নির্বাচনী আধিকারিক বৈভব চৌধুরী বলেন, “নির্বাচনের সময় বিধি অনুযায়ী তল্লাশি চলছে। এ ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকার বেশি নিয়ে যাওয়া যাবে না সেটা নয়। কিন্তু সঙ্গে ওই টাকার উপযুক্ত প্রমাণ থাকতে হবে। তাই প্রমাণ দেখাতে না পারায় আমরা টাকা বাজেয়াপ্ত করেছি।”

অবশ্য বিতর্ক বেড়েছে মন্দিরতলা এলাকার মুদি দোকানি সুব্রত বিশ্বাসকে গ্রেফতার করা নিয়ে। এর আগেও ভারতী ঘোষ পুলিশ সুপার থাকাকালীন গ্রেফতার হয়েছিলেন সুব্রত। কিন্তু তাঁর স্ত্রী কাকলি বিশ্বাস বলেন, “আমার স্বামী প্রতিবাদী মানুষ। পুলিশের বিরুদ্ধেও পুলিশের উঁচু মহলে অভিযোগ জানায়। তাই এর আগে ভারতী ঘোষ এসপি থাকাকালীন আমার স্বামীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছিলেন।” কিন্তু এ বার কী হল? কাকলি বলেন, “আমার স্বামী কয়েকমাস ধরে বিজেপি মিটিংয়ে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে নিজের স্বভাব অনুযায়ী পুলিশের উঁচু মহলে নানা অভিযোগ করছিলেন। তাই পুলিশ দোকানের মধ্যে ঢুকে পিস্তল রেখে ফাঁসিয়েছে।” এমন ঘটনায় বিজেপির প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝা বলেন, “সুব্রত বিশ্বাসের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তবে আমাদের অনেক কর্মীকে পুলিশ মামলায় জড়িয়ে হয়রানির চেষ্টা করছে বলে শুনছি।” অবশ্য খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “একজনকে গ্রেফতার করে ওই পিস্তল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।” আর নির্বাচনী আধিকারিক বৈভবের কথায়, “প্রতিটি তল্লাশির সময় ভিডিয়ো রেকর্ড করা হচ্ছে। ফাঁসানোর প্রশ্নই নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

By Election Kharagpur Armed man Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE