বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা অফিসে হল পুজো। নিজস্ব চিত্র
ফাটল পটকা। বাজল শাঁখ-ঘণ্টা। লকডাউন ভেঙে হল মিছিলও।
বুধবার অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন পুলিশ আর বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে যেন লুকোচুরি চলল পশ্চিম মেদিনীপুরে। এ দিন রাস্তাঘাট মোটের উপরে ফাঁকা থাকলেও বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের উদ্যোগে মেদিনীপুরের বিভিন্ন মন্দিরে বিশেষ পুজোপাঠ ও হোমযজ্ঞ হয়েছে। মেদিনীপুরে জেলা বিজেপির কার্যালয়েও রামের পুজো হয়েছে। ছিলেন দলের জেলা সভাপতি শমিত দাশ প্রমুখ। কোথাও কোথাও হিন্দু জাগরণ মঞ্চ, রামনবমী উদযাপন কমিটির উদ্যোগে দিনটি পালিত হয়েছে। পুলিশের নজর এড়িয়ে পুজো শেষে পটকাও ফাটানো হয়েছে। আবার লকডাউন ভাঙায় পুলিশি ধরপাকড়ও চলেছে। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর গুছাইত-সহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বিজেপির মেদিনীপুর সাংগাঠনিক জেলা সভাপতি শমিত বলেন, ‘‘রাম জন্মভূমির বিষয়টি সাধারণ মানুষের আস্থা এবং আবেগের সঙ্গে যুক্ত। মানুষই এই কার্যক্রম করেছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের কথায় পুলিশ এদিন অতিসক্রিয় হয়ে উঠেছিল। রামের পুজো করতেও বাধা দেওয়া হয়েছে। অন্যায়ভাবে দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করেছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বিজেপি ধর্মকে নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করেছে।’’
কেশপুর, শালবনির মন্দিরেও হোমযজ্ঞ হয়েছে বলে গেরুয়া-শিবির জানিয়েছে। বেলদার দেউলিতে একটি ক্লাবের উদ্যোগে কেশিয়াড়ি-বেলদা রাজ্য সড়কের ধারে রামের ছবি লাগানো হয়। কেশিয়াড়ি মোড়ে বিজেপির একটি মিছিল আটকে ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। লকডাউন অমান্য করার অভিযোগে চন্দ্রকোনা রোড পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্য গৌতম কৌড়ি-সহ কয়েকজনকে আটক করা হয়। গৌতমকে এক পুলিশ আধিকারিকে পা ধরে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনাদের পায়ে ধরছি, আমাদের পুজোর অনুমতি দিন।’’ তবে অনুমতি মেলেনি। এদিন সকালে চন্দ্রকোনা রোডে হিন্দু জাগরণ মঞ্চের প্রভাতফেরি আটকে মাইক বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। বিকেল পর্যন্ত গড়বেতা থানা এলাকায় লকডাউন অমান্য করায় ২৫ জন, গোয়ালতোড় থানা এলাকায় ২২ জনকে আটক করে পুলিশ। একই কারণে ঘাটাল মহকুমায় ৩২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বুধবার। এ দিন দাসপুরের অস্তলে নিম্বার্ক মঠে ভূমি পুজোকে ঘিরে প্রসাদ বিতরণের আয়োজন ছিল। ঘাটালের রানিরবাজার, কুঠিঘাট-সহ কয়েকটি এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে মাস্ক, মিষ্টি বিলি করা হয়। চন্দ্রকোনায় বিজেপি কর্মীরা বাইক র্যালি বের করলে পুলিশ আটক করে।
ঝাড়গ্রামের হনুমান মন্দিরগুলিতে পুজো পাঠের পরে লাড্ডু বিলি হয়েছে। বিজেপি-র শহর মণ্ডলের সভাপতি নন্দন ঠাকুরের অভিযোগ, ঝাড়গ্রাম স্টেশনের আমতল ও ঝাড়গ্রাম ব্লকের মানিকপাড়ায় পুলিশের বাধায় পুজোপাঠ শেষ করা যায়নি। তবে ঝাড়গ্রামের সরডিহা অঞ্চলের বল্লায় ভূমিপুজো উপলক্ষে বিজেপি কর্মীদের আয়োজনে ধূমধামের সঙ্গে পুজো ও যজ্ঞ হয়। গোপীবল্লভপুরেও বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অবনী ঘোষ বিভিন্ন জায়গায় গেরুয়া পতাকা তোলেন। গোপীবল্লভপুর, ছাতিনাশোল ও হাতিবাড়ি এলাকায় হনুমান ও রাম মন্দিরে পুজো হয়। বেলিয়াবেড়া ব্লকের রান্টুয়ায় বিজেপি কর্মীরা গেরুয়া পতাকা বাঁধতে গেলে বাধা দেয় পুলিশ। নয়াগ্রামের আডরা এলাকায় ভূমি পুজোর আয়োজন করেন বিজেপি কর্মীরা। জেলা বিজেপি-র সভাপতি সুখময় শতপথীর দাবি, ‘‘শহর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভূমি পুজো কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে।’’যদিও জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, জেলায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। লকডাউন সর্বাত্মক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy