Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিজেপির সেলিম এলেন তৃণমূলে

প্রত্যাশা মতোই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন কেশপুরের মহম্মদ সেলিম ও তাঁর অনুগামীরা।

দলবদল। নিজস্ব চিত্র

দলবদল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশপুর শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৫৯
Share: Save:

প্রত্যাশা মতোই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন কেশপুরের মহম্মদ সেলিম ও তাঁর অনুগামীরা। রবিবার মেদিনীপুরে এসে শাসক দলে নাম লিখিয়েছেন সেলিমরা। তাঁদের হাতে দলের পতাকা তুলে দিয়ে কার্যত বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। অজিতের ঘোষণা, ‘‘একলক্ষ দিলীপ ঘোষেরও আর ক্ষমতা নেই, এই জেলায় বিজেপিকে বাঁচিয়ে রাখার!’’

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে এসএমএস করা হলেও জবাব মেলেনি। বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘শাসক দলের চাপে বাধ্য হয়ে কেউ কেউ দল ছেড়েছেন। এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না। সাধারণ মানুষ বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন। বিজেপি তার জায়গাতেই রয়েছে।’’

লোকসভা ভোটের পর থেকে কেশপুরে বিজেপির ‘মুখ’ হয়ে উঠছিলেন দুই নেতা। তন্ময় ঘোষ আর মহম্মদ সেলিম। সিপিএম থেকে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানো তন্ময় আর সেলিমের নেতৃত্বেই কেশপুরের একের পর এক অঞ্চলে দলের পতাকা তুলেছিলেন বিজেপির নেতাকর্মীরা। স্বাভাবিকভাবে একাধিক গোলমালের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে এই দু’জনের। একাধিক মামলায় জুলাইয়ে গ্রেফতার হন সেলিম। পরে গ্রেফতার হয়েছেন তন্ময়ও। তন্ময় এখনও জেলবন্দি। মাস পাঁচেক জেল খাটার পরে চলতি মাসের গোড়ায় জামিনে মুক্ত হয়েছেন সেলিম। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে এদিন সেলিম বলেন, ‘‘নতুন নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পরে বিজেপির উপরে আর কোনও ভরসা রাখতে পারছি না। ওরা মুসলিম- বিরোধী।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘বিজেপি দলটা সাধারণ মানুষের জন্য নয়। ওরা বিপদে মানুষের পাশে থাকে না। আমিও প্রয়োজনে বিজেপির নেতৃত্বকে পাশে পাইনি। আসলে এখানে বিজেপিতে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কেউ নেই।’’

এ দিন দুপুরে মেদিনীপুরে তৃণমূলের এক কার্যালয়ে আসেন সেলিমরা। তাঁরা দেখা করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, বিধায়ক দীনেন রায়, শিউলি সাহা, কেশপুরের তৃণমূল নেতা মহম্মদ রফিকদের সঙ্গে। পরে দিলীপ ঘোষকে বিঁধে অজিত বলেন, ‘‘খড়্গপুরে একটা লোক হনুমান টুপি মাথায় দিয়ে না কি বলেছে, তৃণমূলের বহু লোক বিজেপিতে যেতে পারে। পাগলের প্রলাপ বকছে। বিজেপির একদল গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বকে তৃণমূলে যোগদান করিয়ে ওই লোকটাকে শুধু এই বার্তা দিচ্ছি, আমরা কথায় নয়, কাজে করে দেখাই। দেখ কেমন লাগে! এরপর কেশপুরে বিজেপির ঝান্ডা তোলার কেউ থাকবে না।’’ সেলিমদের বিরুদ্ধে থাকা একগুচ্ছ মামলা কি এ বার লঘু হতে পারে? তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিতের জবাব, ‘‘আইন তার নিজের পথ ধরে চলবে। দল থেকে কোনওরকম হস্তক্ষেপ করব না।’’

কেশপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল নতুন নয়। দলেরই একাংশের আশঙ্কা, এ বার কোন্দল আরও বাড়বে। অজিত অবশ্য বলেন, ‘‘সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করবেন।’’ এদিন সেলিমদের হাতে তৃণমূলের একগুচ্ছ ঝান্ডা তুলে দিতে দেখা গিয়েছে রফিককে। কেন এত ঝান্ডা দেওয়া হল? রফিকের জবাব, ‘‘যেখানে যেখানে ওরা বিজেপির ঝান্ডা লাগিয়েছে, এ বার সেখানে সেখানে ওরা তৃণমূলের ঝান্ডা লাগাবে।’’ সেলিম বলেন, ‘‘আগেও মানুষের জন্য কাজ করেছি। আগামী দিনেও মানুষের জন্য কাজ করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Keshpur West Medinipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE