জেলার সদর শহরে ‘হিন্দু জাগরণ মঞ্চ’ ও বজরং দলের শোভাযাত্রা-সভা বন্ধের প্রশ্নে পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতের পথেই যাচ্ছে বিজেপি। দলের অভিযোগ, তৃণমূলের নির্দেশেই শনিবার ওই ধর্মীয় কর্মসূচির অনুমতি দেয়নি পুলিশ। আসলে পুরভোটের মুখে পুলিশকে দিয়ে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করছে শাসক দল। ঘটনাস্থল মেদিনীপুর হলেও আসন্ন পুরভোটের প্রচারের জেলার নানা অংশেই তৃণমূলের এই ভূমিকা তুলে ধরতে চাইছে বিজেপি। দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “যে ভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়া হল তা অন্যায়। তৃণমূলের নির্দেশেই পুলিশ এই পদক্ষেপ করেছে। দলের রাজ্য নেতৃত্বকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছি। পুরভোটের প্রচারেও মেদিনীপুরের এই ঘটনার কথা বলা হবে।’’
শনিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরের কলেজ মাঠে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) সহযোগী ‘হিন্দু জাগরণ মঞ্চ’ ও বজরং দলের উদ্যোগে সভা হওয়ার কথা ছিল। ঠিক ছিল, বেশ কিছু পাড়া থেকে শোভাযাত্রা বেরিয়ে কলেজ মাঠে পৌঁছলে সভা শুরু হবে। রামনবমী উপলক্ষেই ছিল ওই আয়োজন। সভার জন্য সকাল থেকে কলেজ মাঠে মঞ্চ বাঁধাও শুরু হয়। পুলিশ অবশ্য শোভাযাত্রা বা সভা কিছুরই অনুমতি দেয়নি। বিকেলে পুলিশকর্মীরা দাঁড়িয়ে থেকে মঞ্চ খোলার ব্যবস্থা করে। শনিবার সকাল থেকে মঞ্চ ও বজরং দলের ২০ জন কর্মকর্তাকে থানায় ডেকে আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ। রাতে অবশ্য ২০ জনকেই ছেড়ে দেওয়া হয়। জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ জানান, শহরবাসীর একাংশ ওই মঞ্চের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিলেন। তার প্রেক্ষিতেই সভা ও শোভাযাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়নি। আর কর্মকর্তাদের থানায় ডাকা হয়েছিল ওই অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। সন্ধ্যার পরে অবশ্য শহরে কয়েকটি শোভাযাত্রা বেরোয়। তবে তাতে কোনও ব্যানার-ফেস্টুন ছিল না। পুলিশের অনুমতি নিয়ে রবিবার সন্ধ্যাতেও রামনবমী উপলক্ষে শোভাযাত্রা বেরিয়েছে মেদিনীপুর শহরে।
তারপরেও অবশ্য সভা-শোভাযাত্রায় পুলিশি বাধাদানের বিষয়টিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করছে বিজেপি। খড়্গপুর-সহ জেলার ৬টি শহরে পুরভোট আসন্ন। তাই প্রচারে এমন টাটকা একটি বিষয়কে হাতছাড়া করতে নারাজ দলীয় নেতৃত্ব। বিজেপির জেলা সভাপতি তুষারবাবু বলেন, “প্রতি বছর যে শোভাযাত্রা বেরোয় তা এ বার করতে না দেওয়ার কারণ কী? আসলে তৃণমূল দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে। এটা পশ্চিমবাংলায় কোনও দিন ছিল না।”
তৃণমূল যদিও বিজেপির তোলা এই অভিযোগকে কোনও রকম গুরুত্বই দিচ্ছে না। দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “শহরে কোন কর্মসূচির অনুমতি পুলিশ দেয়নি, তা আমাদের জানা নেই। পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে। আর ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি আমাদের করতে হয় না। কারণ, মানুষ তৃণমূলের পাশেই আছেন।” শাসক দলের জেলা নেতৃত্বের একাংশও এ-ও মনে করছেন, এ ক্ষেত্রে পুলিশ কড়া মনোভাব দেখানোয় পুরভোটের আগে সংখ্যালঘু ভোটারদের একটা বার্তা দেওয়া গিয়েছে। যে বার্তায় আখেরে লাভ হবে তৃণমূলেরই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy