এই খালেই ডুবে যায় তিন বালিকা। নিজস্ব চিত্র
দিন কয়েক ধরে গ্রামের খালপাড়ে ফাঁকা জায়গায় আস্তানা গেড়েছিল পনেরোটি যাযাবর পরিবার। খালের জলেই চলছিল স্নান থেকে রান্নার কাজ। এ বার সেই খালেই বাসন মাজতে গিয়ে মৃত্যু হল পৃথক তিনটি যাযাবর পরিবারের তিন বালিকার!
রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সবংয়ের দেভোগ এলাকায়। এ দিন ওই এলাকার কপালেশ্বরী নদী খাল থেকে কদম শবর (১০), জানু শবর (৭) ও বানু বেদ (৬) নামে ওই তিন বালিকার দেহ উদ্ধার হয়। যাযাবর পরিবারের এই তিন বালিকা এ দিন পরিবারের বাসন নিয়ে খালে মাজতে গিয়েছিল। তার পরে দীর্ঘক্ষণ হয়ে গেলেও ফিরে আসছে না দেখে পরিজনেরা খোঁজ করেন। ওই খালে দেহ তিনটি ভাসতে দেখে বালিকাদের পরিবারের সদস্যেরা। এর পরে খবর যায় পুলিশে। দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। কীভাবে মৃত্যু হল তা নিয়ে রয়েছে ধন্দ। যদিও পরিবার ও পুলিশের দাবি, খালের জলে কোনওভাবে তলিয়ে গিয়েই ওই তিন বালিকার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
এর আগে সবং, ডেবরা, খড়্গপুর, মোহনপুর-সহ খড়্গপুর মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় জলে ডুবে বালকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত বছর ছট পুজোর সময়ে খড়্গপুর শহরের নিমপুরায় পুরসভার খোঁড়া একটি পুকুরে পড়ে মৃত্যু হয় এক বালকের। ২০১৭সালের মে মাসে মোহনপুরের নীলদা গ্রামে দুই ভাই-বোনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই বছরই জুনে বেলদার গাঙ্গুটিয়াতে পুকুরে ডুবে দুই বালকের মৃত্যু হয়। পরের মাস জুলাইতে ফের দাঁতনের মনোহরপুর গ্রামে পুকুরের জলে ডুবে মৃত্যু হয়। এ বার সবংয়ে একসঙ্গে তিনজন বালিকার মৃত্যুর ঘটনা ভাবাচ্ছে এলাকাবাসীকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খাল থেকে নানা সময়ে স্থানীয়রা মাটি তোলায় গভীরতা অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। এ দিন সেখানেই বাসন রেখে খেলাধুলো করছিল তিন বালিকা। পরে সেখান থেকেই তিন বালিকার দেহ ভেসে উঠলে সন্তান হারানোর বেদনায় ভেঙে পড়েন তিন মহিলা। কদমের বাবা বিশ্বজিৎ শবর বলছিলেন, “ওরা পুকুর ধারে বাড়ির কাজে গিয়ে খেলাধুলো করছিল। সেই সময়েই খালের জলে পড়ে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে।” ওই খালপাড়ের বাসিন্দা শীলা প্রামাণিক বলেন, “আমরা তো ওই তিনটি মেয়ে খালের জলে ভেসে উঠেছে শুনে গিয়েছিলাম। কীভাবে ঘটনা ঘটেছে জানি না। মনে হচ্ছে ওঁরা স্নান করতে নেমেছিল।” কিন্তু একসঙ্গে তিনজন কীভাবে খালের জলে তলিয়ে গেল সেই ধন্দ কাটেনি এলাকাবাসীর।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, প্রথমে বানু জলে নেমে তলিয়ে যাওয়ায় বাকি দু’জন জলে ঝাঁপ দিয়ে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তবে জলে গভীরতা বেশি হওয়ায় তাঁরাও বাঁচতে পারেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy