Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

টাকা নেওয়ায় অভিযুক্ত প্রদীপ

২০১৬ সালের অগস্টে খড়্গপুরের মালঞ্চর চণ্ডীপুরের ওই পানশালা ঘিরে সরব হয় ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলারা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৯ ০৫:০১
Share: Save:

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো পোস্ট করে খড়্গপুরের পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ করলেন এক মদ ব্যবসায়ী। তাঁর অভিযোগ, বিক্ষোভের জেরে বন্ধ হয়ে যাওয়া মদের দোকান ফের খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১০ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার। অভিযোগ অস্বীকার করে প্রদীপ যা বলেছেন, সেই সূত্রে প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল।

২০১৬ সালের অগস্টে খড়্গপুরের মালঞ্চর চণ্ডীপুরের ওই পানশালা ঘিরে সরব হয় ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, অন্য এলাকার লাইসেন্সে পাড়ার মধ্যে চলা পানশালার জেরে মহিলারা ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন। টানা আন্দোলনে শেষমেশ জেলা আবগারি কালেক্টরের নির্দেশে ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর ওই পানশালা বন্ধ হয়। গত জানুয়ারিতে সেই পানশালা খুলতে গিয়ে মহিলাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন শহরের এক তৃণমূল কাউন্সিলর। এরই মধ্যে সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করলেন ওই পানশালা মালিক নন্দন মিত্র। ওই ভিডিয়োয় (ভিডিয়োর সত্যতা খতিয়ে দেখেনি আনন্দবাজার) নন্দনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘পুরপ্রধান দোকান খোলার জন্য ১০ লক্ষ টাকা চেয়েছিল। অগ্রিম হিসেবে নগদ ৫লক্ষ টাকা বাড়িতে দিয়ে আসি।’’এরপর নন্দনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমার দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। পুরপ্রধান দোকান খোলার নামে ৫লক্ষ টাকা নিলেও দোকান খুলতে পারেননি। এখন টাকা ফেরত চাইলে অপমান করেন।’’ পাশাপাশি তিনি যোগ করেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি ফেরতের কথা বলায় সাহস পেয়েছি। কাটমানির তো প্রমাণ হয় না। কিন্তু আমি যে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলেছিলাম সেই প্রমাণ রয়েছে।”

এ দিন ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরে প্রদীপ বলেন, “আমি এলাকার মহিলাদের সমর্থন করেছিলাম। সেই রাগ রয়েছে মদের দোকানের মালিকের। সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দলের নেতা দেবাশিস চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ রাজা সরকার এসব চক্রান্ত করছে। ভিডিয়োতে রাজার কণ্ঠস্বর রয়েছে।’’ পাশাপাশি যোগ করেন, ‘‘মদ দোকান খোলার এক্তিয়ার আবগারির। তাই আমি টাকা নিয়েছি এটা হাস্যকর।”

তৃণমূলের অন্দরের সমীকরণ অনুয়ায়ী পুরপ্রধানের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে কাউন্সিলর দেবাশিসের। আর দেবাশিসের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাজা। অভিযোগ প্রসঙ্গে দেবাশিস বলেন, ‘‘আমি এসব বিষয় জানি না।” রাজার কথায়, “একশো বছরের পুরনো এক মদ দোকানের মালিক শহরের প্রধান নাগরিকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন সেটা গুরুতর।” শহরের বাসিন্দা বিজেপির রাজ্য নেতা তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা মদ দোকানের বিরুদ্ধে। কিন্তু মদ দোকান খোলার নামে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগও অস্বাভাবিক নয়।

ভিডিয়ো নিয়ে শোরগোল হওয়া পরও অবশ্য পুরপ্রধানের পাশে দাঁড়িয়েছেন চণ্ডীপুর এলাকার মহিলারা। মঙ্গলবার তাঁরা নন্দন মিত্রের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bribe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE