Advertisement
০৪ মে ২০২৪

সংক্রমণ বাড়ছে পুলিশে, আক্রান্ত স্বাস্থ্য আধিকারিকও

জেলার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “খড়্গপুর শহর, ডেবরা, বেলদা মিলিয়ে শুক্রবার রাতে খড়্গপুর মহকুমার ১১ জনের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে।” তার মধ্যে আছেন তিন পুলিশকর্মী ও এক স্বাস্থ্য আধিকারিক।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর ও বেলদা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২০ ০৫:১৯
Share: Save:

রেলশহরে প্রতি দিন গড়ে দু’জন করে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। মাঝে বৃহস্পতিবার কোনও আক্রান্তের খবর আসেনি। ফের একসঙ্গে তিনজনের করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট এল শুক্রবার রাতে। নতুন-নতুন এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় শহর জুড়ে আংশিক লকডাউনের পদক্ষেপ শুরু করল প্রশাসন।

জেলার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “খড়্গপুর শহর, ডেবরা, বেলদা মিলিয়ে শুক্রবার রাতে খড়্গপুর মহকুমার ১১ জনের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে।” তার মধ্যে আছেন তিন পুলিশকর্মী ও এক স্বাস্থ্য আধিকারিক।

শুক্রবার রাতে শহরের ইন্দা, ছোট আয়মা ও মালঞ্চ রোডে তিনজনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। শনিবার নতুন করে ওই তিনটি এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ইন্দা ও ছোট আয়মায় যে দু’জন আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা দিন কয়েক আগে বিহার থেকে ফিরেছিলেন। মালঞ্চ রোডে আক্রান্ত হয়েছেন এক মহিলা। তিনি মালঞ্চর বিশালপাড়া এলাকার এক আক্রান্তের আত্মীয় বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও খড়্গপুর গ্রামীণের পপড়আড়ার এক বাসিন্দা পজ়িটিভ হয়েছেন। তিনি এক আক্রান্ত রেলকর্মীর সংস্পর্শে এসেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। ডেবরা থানার এক এএসআইও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। কয়েকদিন আগে করোনার উপসর্গ দেখা যাওয়ায় গৃহ পর্যবেক্ষণে ছিলেন তিনি।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত পর্যন্ত রেলশহরে ৬৪ জন করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ হলেন। তাঁদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। শহরের উপকন্ঠে সালুয়া ইএফআর ক্যাম্পে ইতিমধ্যেই ৯৯ জন আক্রান্ত হওয়ায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে খড়্গপুর শহরে জরুরি পরিষেবা বাদে সব দোকান বিকেল ৫টা থেকে বন্ধ রাখতে আগেই নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন। তারপরেও সংক্রমণ আটকানো যাচ্ছে না।

শহরের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষিকা সোমালি নন্দী বলেন, “এভাবে কিছু লাভ হবে না। বরং ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। গোটা শহরে কড়া লকডাউন প্রয়োজন।” ব্যবসায়ীদের একাংশও একই দাবি তুলছেন।

খড়্গপুর শহরের পরিস্থিতি সামলাতে শুক্রবার বৈঠকে বসে করোনা নিয়ন্ত্রণে তৈরি টাস্ক ফোর্স। অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “শহরের অনেকেই লকডাউন চাইছেন। টাস্ক ফোর্স কমিটির বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জেলাশাসকের অনুমোদন পেলে সে দিকে এগোনো হবে।” মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী জানান, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। সংক্রমণ বাড়তে থাকলে গোটা শহরে আংশিক লকডাউন চালু করা হবে। সেক্ষেত্রে দুপুরের পরে কাউকে বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া হবে না।

বেলদা থানার জোড়াগেড়িয়া ফাঁড়ির দুই পুলিশ কর্মীও করোনা পজ়িটিভ হয়েছেন। শুক্রবার রাতেই সেই রিপোর্ট আসে। তাঁদের মেদিনীপুর আয়ুষ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গত ১৩ জুলাই ওই ফাঁড়ির এক এসআইও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। শুধু পুলিশ নয়, এক স্বাস্থ্য আধিকারিকও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মেদিনীপুর মেডিকেল থেকে বদলি হয়ে গত ১৫ জুলাই কেশিয়াড়ির একটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কমিউনিটি হেল্থ অফিসার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। শনিবার তাঁকে শালবনির করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া বেলদা থানা এলাকার মান্না পঞ্চায়েতের এক কিশোরী ও

হেমচন্দ্র পঞ্চায়েত এলাকার একই পরিবারের দু’জনের রিপোর্টও পজ়িটিভ এসেছে শুক্রবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE