Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দুর্দিনে এসে শুভেন্দুর বার্তা, পাশে থাকবেন

শুভেন্দুর আসার কথা ছিল শনিবার সন্ধ্যায়। কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক অপেক্ষা করছিলেন তারজন্য। কিন্তু বাঁকুড়া, গড়বেতা, চন্দ্রকোনা হয়ে শুভেন্দু অবশ্য আসেন রাত দশটায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৯ ০১:৪৯
Share: Save:

অতীতে খুব বেশি তাঁকে খুব একটা দেখা যায়নি তাঁকে। কিন্তু এখন দলের ‘দুর্দিন’। তার উপর দলনেত্রী দায়িত্ব সঁপেছেন তাঁর উপর। বাঁকুড়া থেকে ফেরার পথে ঘাটালে এলেন শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার রাতে। মুষড়ে পড়া নেতা-কর্মীদের উৎসাহিত করলেন। তাঁর ফাঁকে বললেন, ‘‘আমি ঘাটালের সুদিনে একবারও আসিনি। তবে ২০১১ সালে শঙ্করবাবু (ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দলুই) যখন মার খেয়েছিলেন, তখন ওঁকে দেখতে এসেছিলাম। যে জায়গায় গন্ডগোল হয়েছিল, সেই লক্ষ্ণণপুরেও গিয়েছিলাম। আবারও এসেছি। আমাকে দলের কাজে সবসময় পাবেন।”

শুভেন্দুর আসার কথা ছিল শনিবার সন্ধ্যায়। কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক অপেক্ষা করছিলেন তারজন্য। কিন্তু বাঁকুড়া, গড়বেতা, চন্দ্রকোনা হয়ে শুভেন্দু অবশ্য আসেন রাত দশটায়। তখন কিছুটা ফিকে হতে শুরু করেছে ভিড়। যে ক’জন ছিলেন তাঁদের নিয়েই বৈঠক করেন শুভেন্দু। কর্মীদের মনোবল বাড়াতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ভুলে যাবেন না রাজ্যে এখন তৃণমূলের সরকার আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যয় শুধু মুখ্যমন্ত্রী নয়। পুলিশ মন্ত্রী। কোনও সমস্যা হলে দলকে জানান।” এরপরই ঘরছাড়া কর্মীদের ঘরে ফেরানো এবং বন্ধ পার্টি অফিস পুনরুদ্ধারে জোর দেন পরিবহণ মন্ত্রী। ঘাটাল নেতৃত্বদের প্রতি তাঁর নির্দেশ, “রবিবার থেকেই ঘাটালে গ্রাম ঘুরে আমাকে রিপোর্ট করুন। প্রয়োজনে আমি আবারও আসব। ৬ জুন অথবা ৭ জুন।”

২৩ মে রাত থেকেই উত্তপ্ত ঘাটালের বিভিন্ন এলাকা। বিশেষ করে ব্লকের মনসুকা, সুলতানপুর, ইড়পালা, বীরসিংহ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রামে ধারাবাহিক ভাবে সন্ত্রাস চলছেই। কখনও তৃণমূল কর্মীদের মারধর কখনও আবার বিজেপির মিছিলে হাঁটতে বাধ্য করার মত অভিযোগ উঠছে। শুধু তাই নয়। অভিযোগ, বহু ক্ষেত্রে তৃণমূলের অঞ্চল ও বুথ স্তরের অফিস গুলিতেও তালা ঝুলিয়ে দিচ্ছেন বিজেপির কর্মী, সমর্থকেরা। মনসুকা, সুলতানপুর এলাকার গোটা চারেক পার্টি অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বিজেপির ভয়ে তৃণমূলের বহু বুথ স্তরের কর্মী-নেতা ঘরছাড়া। নিয়ম করেই মারধর, হুমকিও চলছে। তার জেরে ঘাটালে তৃণমূল কর্মীদের মনোবল একেবারে ভেঙে গিয়েছে। সাধারণ ভাবে শুভেন্দুকে সেভাবে দেখা যেত না ঘাটাল এলাকায়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এলেন তিনি। তাঁকে পেয়ে উৎসাহিত অনেকেই। নীচুতলার কর্মীরাও বলছেন, “এমন একটা পদক্ষেপ জরুরি ছিল। দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে কর্মীদের অনেকেই বসে যাওয়ারও সম্ভাবনা ছিল।” কিন্তু সব দায়িত্ব পালন করলেও কেন সুদিনের প্রসঙ্গ টানলেন শুভেন্দু? তৃণমূলের একাংশ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শুভেন্দু-শঙ্করের সম্পর্কের ওঠানামার উপরেই রয়েছে এর উত্তর।

শুভেন্দুর এই সফরকে অবশ্য বিজেপি গুরুত্ব দিতে নারাজ। বিজেপির ঘাটাল লোকসভা কমিটির আহ্বাক তপন কুমার মাইতি বলেন, “তৃণমূল দলটাকে মানুষ মন থেকে সরিয়ে দিয়েছে। আর কোনও ভাবেই সেটা ফেরানো যাবে না। রাজ্য এবার বিজেপির নেতৃত্বেই চলবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suvendu Adhikari TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE