Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

নালিশ নবান্নে, এক মাসেই টাকা দেবের গ্রামের স্কুলে 

সাংসদ দেবের অনুমোদন সত্ত্বেও এই বরাদ্দ টাকা মিলছিল না বলে অভিযোগ উঠেছিল। সরাসরি নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরেই নালিশ ঠুকেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৯ ০০:০৩
Share: Save:

জুনে নালিশ গিয়েছিল নবান্নে। আর জুলাইয়ে এসে গেল টাকা। উন্নয়নের বরাদ্দ পেয়ে খুশি দেবের গ্রামের স্কুল।

জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, কেশপুরের মহিষদার ‘মহিষদা রামনারায়ণ হাইস্কুল’-কে দেবের সাংসদ তহবিল থেকে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ অর্থে গার্ডওয়াল তৈরি হবে। সব মিলিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা পাবে স্কুলটি। প্রথম পর্যায়ে ১৫ লক্ষ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ অর্থের কাজ আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে। ইউসি (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) দিসে পরে ফের ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।

সাংসদ দেবের অনুমোদন সত্ত্বেও এই বরাদ্দ টাকা মিলছিল না বলে অভিযোগ উঠেছিল। সরাসরি নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরেই নালিশ ঠুকেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তারপরই তড়িঘড়ি কেন টাকা মেলেনি, সে ব্যাপারে জেলার রিপোর্ট তলব করা হয়। জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিকের স্বীকারোক্তি, ‘‘নবান্নে রিপোর্ট পাঠানো হয়। কেন মহিষদার ওই স্কুলকে সাংসদ-তহবিলের টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না, রিপোর্টে তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।’’ তারপরই বরাদ্দ হয়েছে টাকা।

মুখ্যমন্ত্রীর কাটমানি ফেরতের নির্দেশের কয়েকদিন আগে, গত ১০ জুন নবান্নে খোলা হয়েছে ‘গ্রিভান্স সেল’ বা অভিযোগগ্রহণ কেন্দ্র। ই-মেলে সেখানেই অভিযোগ জানিয়েছিলের মহিষদার স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষক মহম্মদ ফজলুল হক মানছেন, ‘‘অনেকবার মেদিনীপুরে কালেক্টরেটে যাওয়া হয়েছিল। কিছু সুরাহা হয়নি। সুরাহা হবে, এই আশাতেই মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠানো হয়।’’

কেশপুরের মহিষদায় দেবের দেশের বাড়ি। সেই গ্রামেরই স্কুল ‘মহিষদা রামনারায়ণ হাইস্কুল’। স্কুলের পাশে পুকুরের গার্ডওয়াল নেই। গার্ডওয়াল তৈরির জন্য দেবের কাছে অর্থ সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিল স্কুল। ছাত্রছাত্রী প্রায় বারোশো। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সব দিক দেখে আবেদনে সাড়া দেন দেব। গার্ডওয়াল তৈরির জন্য সাংসদ-তহবিল থেকে ৩০ লক্ষ টাকা বরাদ্দের অনুমোদন গত ফেব্রুয়ারিতে দেন তিনি। অথচ, বরাদ্দ পাচ্ছিল না স্কুলটি।

কেন? জেলা প্রশাসনের এক সূত্র জানাচ্ছে, দেবের তহবিলে ওই পরিমাণ অর্থ ছিল না। সাংসদেরা এলাকা উন্নয়নে বছরে ৫ কোটি টাকা করে পান। তবে গত পাঁচ বছরে দেব ২৫ কোটির জায়গায় পেয়েছিলেন ১৭ কোটি ৫০ লক্ষ। জেলা প্রশাসনের ওই সূত্র জানাচ্ছে, দেবের সাংসদ-তহবিলে ৫ লক্ষ ২৯ হাজার ১০ টাকা ৫০ পয়সা ছিল। জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘মহিষদার ওই স্কুলকে মোট ৩০ লক্ষ টাকা দিতে হত। প্রথম পর্যায়ে ১৫ লক্ষ দিতে হত। অথচ, সাংসদ-তহবিলে ওই পরিমাণ অর্থই ছিল না। তাই স্কুলকে অর্থ দেওয়া সম্ভব হয়নি।’’

সম্প্রতি দেবের সাংসদ-তহবিলে আড়াই কোটি টাকা এসেছে। সবদিক খতিয়ে দেখে দ্রুতই সে টাকা নির্দিষ্ট খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে। মহিষদার স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলছিলেন, ‘‘স্কুলের অদূরে দেবের বাড়ি। জানতাম, স্কুলের জন্য অর্থ সাহায্যের আবেদন জানানো হলে দেব সাড়া দেবেন। আমরা খুশি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dev Ghatal Nabanna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE