Advertisement
১১ মে ২০২৪
রাস্তা জুড়ে রাখা বালি
Student

বাসের ধাক্কায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যু

স্থানীয় সূত্রের খবর, রাজ্য সড়কের ওই অংশে একদিকে ছিল বালির স্তূপ।

দুর্ঘটনার পর উত্তেজিত জনতার বাস ভাঙচুর। নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনার পর উত্তেজিত জনতার বাস ভাঙচুর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মহিষাদল শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২০ ০১:০০
Share: Save:

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল। পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল ওই ছাত্রীর। রাস্তার উপরে ইমারতি সামগ্রী ফেলে রাখার ফলে বৃহস্পতিবার মহিষাদলের লক্ষ্যা হাইস্কুলের কাছে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

মৃত বনশ্রী রাউল (১৭) মহিষাদলের ডিহি মাসুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। সে লক্ষ্যা হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের ছাত্রী। এ দিন দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের অ্যাডমিট নিয়ে বনশ্রী সাইকেলে বাড়ি যাচ্ছিল। স্কুল থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে হলদিয়া- মেচেদা রাজ্য সড়কে সে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, রাজ্য সড়কের ওই অংশে একদিকে ছিল বালির স্তূপ। অন্য দিকে বেআইনি ভাবে রাখা ছিল একটি গ্যাসের গাড়ি। বনশ্রী আরও দুই ছাত্রীর সঙ্গে সাইকেলে মহিষাদলের দিকে যাচ্ছিল। বাকি দুজন বালির স্তূপ পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গেলেও বালিতে বনশ্রীর সাইকেলের চাকা পিছলে যায়। সে রাস্তার উপরে পড়ে যায়। এ দিকে, উল্টো দিকে গ্যাসের গাড়ি রাখায় থাকায় রাস্তার পরিসর কমে গিয়েছিল। ওই সময় রাস্তর ওই অল্প পরিসর অংশ দিয়ে হলদিয়ার দিক থেকে আসা একটি বাস পেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। বনশ্রী হঠাৎ পড়ে যাওয়ায় বাসের চালক সামলাতে না পেরে তাকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই ছাত্রীর।

দুর্ঘটনার পরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধ করেন। ভাঙচুর করা হয় বাসটিতে। এলাকায় যায় পুলিশ। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনাস্থলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। তবে পুলিশ লাঠিচার্জের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে মহিষাদল থানার পুলিশ দেহ হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠায়।

লক্ষ্যা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস পাহাড়ি এবং কয়েকজন শিক্ষক ওই ছাত্রীর পরিবারের সাথে দেখা করে কথা বলেন। দেবাশিস বলেন, ‘‘আজ স্কুলে অ্যাডমিট দেওয়া হচ্ছিল। মেয়েটি খুব শান্ত ও লাজুক স্বভাবের ছিল। এমন দুর্ঘটনায় মর্মাহত।’’

স্থানীয়দের অভিযোগ, হলদিয়া মহকুমার চৈতন্যপুর, মহিষাদল, দুর্গাচক-সহ একাধিক জায়গায় রাজ্য সড়কে ইমারতি দ্রব্য রাখা হয়। চলে বেআইনি পার্কিংও। এ ব্যাপারে বারবার প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু সব চোখের সামনে ঘটলেও কোনও বিষয়েই সদর্থক পদক্ষেপ করেনি প্রশাসন। তাই বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে। এ দিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অমিত ধাড়া বলেন, ‘‘এভাবেই সব কিছু পড়ে থাকে। প্রশাসন দেখেও দেখে না। প্রশাসনিক উদাসীনতার জন্যই আজ এক মায়ের কোল খালি হল। আর কবে প্রশাসনের টনক নড়বে!’’

এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পথ নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক হয়েছে। আরও বেশি করে রাস্তা ইমারতি দ্রব্য সরাতে অভিযান চালানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Student Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE